সোশ্যাল বার্তা : গত ৩রা ও ৪ঠা অক্টোবর নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর সিঞ্চন দু দিনের ‘সুন্দরবন পথনাটক অভিযান’ শুরু করে পথ নাটক ‘ও নদীরে’ নিয়ে । নাট্য প্রদর্শিত হয় চারটি স্থানে। ৩রা অক্টোবর বিকাল ৪.০০- কুমিরমারি ; ৫.৩০ কালিদাসপুর। ৪ঠা অক্টোবর সকাল ৯.০০ সাতজেলিয়া এবং বিকাল ৪.০০ ক্যানিং। সামগ্রিক কর্মসূচি আয়োজনের দায়িত্ব গ্রহণ করে ‘মরিচঝাঁপি গোলপাতা’, ‘ফুলমালঞ্চ কথা নাট্য সংস্থা’ এবং ‘সুন্দরবন পাপেট থিয়েটার’।
অভিযানের উদ্দেশ্য:
১/ বিশ্ব পরিবেশ ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের স্বপক্ষে প্রচার।
২/ সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ রোপণ ও ম্যানগ্রোভ রক্ষা বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা।
৩/ বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা।
৪/ সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান।
প্রথম দিনের কর্মসূচি অনুসারে যথাযথ ভাবে ৪.০০ কুমিরমারিতে প্রদর্শিত হলো নাটক ও নদীরে’। নাটক নিয়ে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পরার মতো। বেলা শেষে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের দল ভীড় করে এসেছিলেন নাটক দেখতে। নাটকটি তাঁরা বেশ উপভোগ করেন। অনেকেই নাটক শেষে অংশ নেন ‘পরিবেশ ও নদী বাঁচাও’ বিষয়ে আলোচনায় এবং মতামত জ্ঞাপন করেন।
সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় সাতজেলিয়ার প্রদর্শন বন্ধ থাকে। স্থানীয় মানুষের আবেদন ৪/১০ এ সকাল সাতটায় তারা আসবেন নাটক দেখতে।
‘ও নদীরে’ এমন একটি নাটক যার মূল চরিত্র নদী । নদীয়া জেলার অন্যতম নদী ‘জলঙ্গি’। একদা যার দুই তীরের জনজীবন ছিল নদী নির্ভর। দুপাশের সভ্যতা ও সংস্কৃতিও গড়ে উঠেছিল নদীকে কেন্দ্র করে। পরবর্তী কালে অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন, মানুষের অপরিমিত লোভ ও যথেচ্ছ অপব্যবহার সেই নদীকে ঠেলে দিয়েছে ধ্বংসের মুখে। অথচ নদী না বাঁচলে একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে এতদঞ্চলের পরিবেশ ও জনজীবন। এই বিস্তির্ণ অঞ্চলের জীবনধারা সেই জলঙ্গী বাঁচানোর বার্তা নিয়েই কৃষ্ণনগর সিঞ্চন নির্মাণ করেছে পথ নাটক ‘ও নদীরে’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা – সুশান্ত কুমার হালদার। তথ্যসূত্র ; শিব শংকর পাল ও সুপ্রতিম কর্মকার । তৃতীয় ধারার এই নাট্যপ্রযোজনায় অংশগ্রহণ করেছে একঝাঁক তরুণ অভিনেতা অভিনেত্রী – গৌর সাহা, সতীনাথ মণ্ডল, সৌরভ শীল, স্বাগত বৈশাখ হালদার, তন্ময় সরকার, স্মরজিত মন্ডল, মধুমিতা ঘোষ, মিষ্টু মন্ডল, পূর্ণিমা পাল ও মেঘনা সাহা । প্রীতিলতা নন্দী। বিশ্বজুড়ে নদী বাঁচাও ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সপক্ষে এ এক সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ।
২য় দিনের সকাল সাতটায় সাতজেলিয়া বাজারে প্রদর্শিত হলো নাটক – ‘ও নদীরে’। মাঠে যাবার আগে ছাতা মাথায় বসে পড়লেন গ্রামবাসীরা দেখতে। কালিদাসপুর স্কুলে নাটক প্রদর্শিত হলো সকাল নটায়। থমকে যাওয়া পথচলতি মানুষ বেশ উপভোগ করলেন । জানালেন মতামত। বিকালে সকলে পৌঁছে গেলাম ক্যানিং। অপেক্ষা করছিল ‘ফুল মালঞ্চ কথা নাট্য সংস্থা’ ও ‘সুন্দরবন পাপেট থিয়েটারে’র বন্ধুরা। তাদের সেখানে ‘পথে নাটক পথে পুতুল’ উৎসব সূচিত হলো ‘ও নদীরে’ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে। উৎসাহ নিয়ে স্থানিয় মানুষেরা উপস্থিত হলেন, নাটক উপভোগ করলেন এবং নাটক শেষে জ্ঞাপন করলেন মতামত। এই মঞ্চে ‘কৃষ্ণনগর সিঞ্চন’ এর পক্ষ থেকে ‘কথা’র তরুণ শিল্পী ‘পাখি’র হাতে সম্মাননা তুলে দেন এই সময়ে বাংলা নাট্যমঞ্চের অন্যতম অভিনেত্রী ‘প্রীতিলতা নন্দী’ ।
এবার ঘরে ফেরার পালা।