রমিত সরকার: শহরের দুর্গাপুজো জৌলুস, আলোয় ঝলমল করে উঠে পুজো মণ্ডপ । নানান রকমের থিমে সেজে ওঠে মন্ডপ । গ্রাম থেকে শহরের পুজো মণ্ডপ দেখতে যাওয়া মুখ গুলো ভিড়ের মধ্যে কোথাও যেন হারিয়ে যায় । গ্রামে ফিরে ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয় গ্রামের উৎসবে মেতে ওঠা। ৭০ বছরের হারিয়ে যাওয়া পুজো ফিরল গ্রামে। বিশ্বভারতী সংগীত ভবনের ছাত্র প্রীতম চক্রবর্ত্তী নিজের হাতে প্রতিমা নির্মাণ করে নজির গড়লেন। পূজার সূচনা হয়েছিল ৭২ বছর আগেই ত্রিপুরা আগরতলায়। তারপরই সেখান থেকে ছাত্রের পূর্ব পুরুষরা চলে আসে বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া থানার অন্তর্গত কোপাই স্টেশনের পাশে পলাশডাঙ্গা গ্রামে।
প্রায় ৭০ বছর ধরে বন্ধ ছিল দুর্গাপুজো । গত দু’বছর ধরে সেই পূজার সূচনা করেছে বিশ্বভারতী সংগীত ভবনের পড়ুয়া প্রীতম চক্রবর্তী । কোনোরকম প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াই নিজের হাতে মাটি দিয়ে তৈরি করে দশভূজা দুর্গা প্রতিমা ও অন্যান্য মূর্তি । ষষ্ঠীর দিন শুরু হয় দুর্গা পুজো , নেই কোনো বলির প্রথা । সাধারণত সাবেকি প্রতিমার চালচিত্রে দেখা যায় দশমহাবিদ্যা , হরগৌরীর বিয়ে ,ত্রিদেব, গনেশজননী, ইত্যাদির ছবি কিন্তু চক্রবর্ত্তী বাড়ির চালচিত্র একটু ভিন্ন ধরণের। এখানে দেখা যায় অরণ্যের ছবি এবং তার মাঝখানে ধ্যানরত শিব। প্রীতমের তৈরি প্রতিমায় সিংহের আদল বৈষ্ণবীয়, ঘোটকাকৃতির। কিন্তু শাক্ত মতে টানা ৫ দিন ধরে চলে পুজো। পুজোর ক’টা দিন পরিবারের লোকজন শহর ছেড়ে মিলিত হয় গ্রামের বাড়িতে। চলে খাওয়া-দাওয়া,নানান গল্প আড্ডা, গানবাজনা।
বিসর্জনের দিন মশাল হাতে দুর্গা প্রতিমার সামনে শোভাযাত্রা করে মাতৃমূর্তি পুকুরঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় । বিশ্বভারতী সংগীত ভবনের ছাত্র শিল্পী প্রীতম চক্রবর্তী জানান, এই পুজো ৭০ বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । তারপরে নিজে উদ্যোগ নিয়ে এই পূজার সূচনা করি। প্রতিমা তৈরি থেকে সমস্ত কিছু নিজের হাতে আমি করি। শহরের পুজোর থেকে গ্রামের পুজোর আনন্দই আলাদা , ছোট বড় সবাই মিলে ভীষণ আনন্দ করি পুজোর ক’টা দিন। আমাদের এই পুজোতে কোন বলির প্রথা নেই , দশমীর দিন হাতে মশাল নিয়ে শোভাযাত্রায় বের হয়।