দেবু সিংহ,মালদা: ফের গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে মালদহের কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মাস কয়েক আগেই গঙ্গার ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে ওই পঞ্চায়েতের চিনাবাজার গ্রাম। তার আগে নদীগর্ভে বিলুপ্ত হয়েছে সরকারটোলা। এবার কোপ পড়ল লালুটোলা এবং ভীমা গ্রামের উপর। মাত্র দু’দিনেই লালুটোলা ও ভীমা গ্রামের শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। একটি আমবাগানে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। বীরনগরে পাড়ের ভাঙন দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন পাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন। চোখের সামনে ধসে যাচ্ছে নদীর পাড়। গঙ্গা গিলছে বসতবাড়ি। লালুটোলা আর ভীমা গ্রামের বাকি মানুষজন ঘরবাড়ি ভেঙে সবকিছু অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদেরকে নিজের হাতে ভেঙে ফেলতে হচ্ছে বসতবাড়ি। দেওয়ালের ইট, টিনের চাল, বেড়া, নিজের হাতে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন মালদহের কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দারা। নিজের হাতে নিজের বাড়ি ভেঙেই কপালে ভিটেহারার তকমা সেঁটে নিচ্ছেন তাঁরা।
চোখের জল ঝরে পড়ছিল রবিউল ইসলামের। হাতুড়ি দিয়ে নিজের বাড়ির দেওয়ালের ইটগুলি খুলে নিচ্ছেন তিনি। ইটগুলি মাথায় নিয়ে অন্যত্র সরাচ্ছেন স্ত্রী সাবিনা বিবি। ওই দম্পত্তির কথায়, “খুব কষ্ট করে পাকা বাড়িটা গড়েছিলাম। কিন্তু সেটা আর থাকল না। গঙ্গার ভাঙনে ভিটেটুকু চলে যাবে। তাই বাড়ির আসবাবপত্র, সরঞ্জাম খুলে নিয়ে অন্যত্র সরে পড়ছি।” পুরনো ভিটের ইট খুলে এনে নয়া ঠিকানা গড়ার ভাবনা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে তা এলাকা ঘুরেই বোঝা যায়। ভাঙনের জেরে সবকিছুই ধুয়েমুছে চলে গিয়েছে গঙ্গাগর্ভে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি এখনও। অর্ধাহারে রাত জাগতে হবে তাঁদের।