পেট্রোল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই বাড়ছে সিএনজি’র 

Social

মলয় দে নদীয়া:- ছোটবেলায় আমরা পাঠ্য বইয়ে পড়েছি পেট্রোলিয়ামকে বলা হয় তরল সোনা। এই পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যই হলো জ্বালানি তেল, মানে ডিজেল বা পেট্রোল। এই পেট্রোলের দাম বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে একে সত্যিই সোনার সমকক্ষই বলা যায় নির্দ্বিধায়। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই পেট্রোলের বিকল্প কিছুর চাহিদা তৈরী হচ্ছে।

CNG অর্থাৎ কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস হলো এরকমই একটি বিকল্প জ্বালানি। বাইক বা মোপেড, এইধরনের টু-হুইলার বাদে তিন চাকা অটো বা বাস-লরি, যেকোনো পেট্রোলের গাড়িতেই CNG ব্যবহার করা যায় স্বচ্ছন্দে। অনেকের ধারণা আছে CNG তে চললে গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি হয় বা তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু LOVATA সার্ভিস সেন্টারের কর্মী মলয় চ্যাটার্জী আমাদের জানালেন যে, এরকম কোনো সম্ভবনাই নেই, কারণ CNG যেহেতু ন্যাচারাল গ্যাস তাই এতে কার্বন থাকে না, আর যে গ্যাসে কার্বনই নেই সেই গ্যাস থেকে ইঞ্জিনে কার্বন জমারও কোনো সম্ভবনা নেই। তাই CNG জ্বালানি হিসেবে ইঞ্জিনের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে পেট্রোলে চালিত কোনো গাড়িকে CNG তে কনভার্ট করতে গেলে একটা কিট পরিবর্তন করতে হয়, যে কিটটির দাম মোটামুটি ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকার মধ্যে। পেট্রোলের থেকে এই CNG অনেক বেশী সাশ্রয়ী। পেট্রোলের থেকে CNG এর মাইলেজ প্রায় দেড়গুণ বেশী, কিন্তু দাম প্রায় ৪০ শতাংশ কম। তাই CNG পরিবেশ বান্ধব হওয়ার সাথে সাথে পকেট বান্ধবও বটে।

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের পশ্চিমবঙ্গ শাখা পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলায় এই CNG পাম্প বসনোর অথরাইজেশন পেয়েছে। হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের পশ্চিমবঙ্গ শাখার DGM অরূপ রতন বিশ্বাস মহাশয় এ বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানালেন। তিনি বললেন পশ্চিমবঙ্গে প্রথম এই CNG পাম্প বসানো হয় দুর্গাপুরে, আর দ্বিতীয় হলো আমাদের শান্তিপুরের এই গোবিন্দপুর কমলা সার্ভিস সেন্টার। গোবিন্দপুরে এই পাম্প বসানো হয়েছে সেটাও প্রায় একবছর হয়ে গেল। কলকাতা সংলগ্ন কিছু অঞ্চল এবং হাওড়া ও হুগলীতে গতবছর বেশ কয়েকটি CNG বসানো হয়েছে এবং এ বছরেও অনেকগুলি CNG বসানোর কাজ জোরকদমে চলছে।

তিনি এও জানান ইতিমধ্যে দিল্লি মুম্বাইয়ের মতো শহরে বেশ ভালো পরিমাণে CNG সার্ভিস চালু হলেও পশ্চিমবঙ্গে এই CNG এর গ্রহণযোগ্যতা এখোনো খুব বেশী নেই। তবে চেষ্টা চলছে এই গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তোলার। যেভাবে দূষণ বাড়ছে, পেট্রোলের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে বা ভূগর্ভস্থ জ্বালানির পরিমাণ আস্তে আস্তে কমে আসছে তাতে অদুর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষকে এই CNG এর ওপরেই নির্ভরশীল হতে হবে এ কথা বলাই যায় । ইউরোপীয়ান কান্ট্রিগুলোতে আগামী ২০৩০ এর মধ্যেই সমস্ত যানবাহনকে CNG তে কনভার্ট করে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন আমাদের ভারতবর্ষ এই ইউরোপীয়ান দেশগুলির এই পরিকল্পনাকে কে কতটা অনুসরণ করতে পারে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

Leave a Reply