মলয় দে, নদীয়া :- নদীয়ার ধানতলা থানার আরংঘাটায় চূর্ণী নদীর পূর্বপাড়ে ১৭২৮ খ্রিস্টাব্দে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নির্মাণ করেছিলেন যুগলকিশোর মন্দির। সারা বছরই এখানে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে।
এছাড়াও প্রাচীন শিল্পকর্মের নিদর্শন আজও মন্দিরে রয়েছে। মন্দিরে প্রবেশ পথেই রয়েছে পূর্ব দিকে মুখ করা পাঁচটি খিলান বিশিষ্ট বারান্দা। এছাড়াও মন্দিরের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে প্রাচীন পঙ্খের কাজ।যদিও সেই সব শিল্পকলা এখন প্রায় অবলুপ্তির পথে।
ভক্তবৃন্দ দের কাছ থেকে জানা যায় গঙ্গারাম দাস নামে এক ব্যক্তি বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের একটি কিশোর মূর্তি নিয়ে এসেছিলেন। তারপর তিনি সেটি পূর্ব বর্ধমানের সমুদ্রগড় এলাকায় স্থাপন করেন। পরবর্তীতে বর্গী আক্রমণের সময় গঙ্গারাম ওই মূর্তি নিয়ে ভাগীরথী নদী পার করে আরংঘাটা এসে ওঠেন। তখন আরংঘাটা থাকতেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সেপাই রামপ্রসাদ। তার কাছে আগে থেকেই গোপীনাথ নামে একটি কৃষ্ণ বিদ্রোহ ছিল। যদিও সেটি ছিল গোপীনাথ জিউর মন্দিরে। এই মন্দিরের পাশে একটি চালা তৈরি করেন গঙ্গারাম। পরবর্তীতে সেখানে প্রতিষ্ঠা পায় কিশোর কৃষ্ণমূর্তিটি।
পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণনগরের মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজবাড়ী ভূগর্ভস্থ থেকে একটি রাধার মুক্তি পেয়ে সেটিকেও গঙ্গারামের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তী সেটিও এখানে স্থান পায়। এরপরই এই যুগলের একসঙ্গে সহাবস্থান থেকে মন্দিরের নামকরণ হয়েছে যুগলকিশোর মন্দির।
গতকাল দেখা যায় সেই মন্দিরের একাংশে ধ্বস নেমেছে, একনাগাড়ে বর্ষণের ফলে। বহু প্রাচীন ঐতিহ্য মন্ডিত এই মন্দির রক্ষায় সেবাইতরা সরকারি বা ব্যক্তিগত সাহায্য প্রার্থী।