পুর্ব মেদিনীপুর:– সময়টা মহামারি কাল। মারন ভাইরাসের সাথে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার হল লকডাউন সহ নানা রকম বিধিনিষেধ। ফলে মাসের পর মাস কার্যত থমকে গেছে মানুষের জীবন প্রবাহ। সবথেকে অসুবিধায় দিন গুজরান করছেন বেসরকারি ভাবে অতি স্বল্পমাহিনা উপার্জনের মানুষ জন। সংসার প্রায় অচল অবস্থা।
কোলাঘাট নতুন বাজারের একটি স্বেচ্ছা সেবী সংস্থা মহামারি আবহে কাজ হারানো সেইসব নিম্নবিত্তদের জন্য সাম্মানিক এক টাকা মূল্যে শুরু করেছে “স্বজন-ভোজন” নামক কর্মসূচী। খাদ্য তালিকায় থাকছে গরম ভাত, লঙ্কা- লেবু- পেয়াজ, ভাজি, আলু-পটলের রসা, ডিমের কারি, পায়েস, রসগোল্লা। কর্মহীন মানুষদের দ্বিধা বা সংকোচ কাটাতে আত্মিয় এবং বন্ধু জ্ঞানে কূপন বিলিয়ে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। ফুলের সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে প্রাঙ্গণ। হাল্কাসুরে বাজছে সানাইয়ে খুশির রাগ-রাগিনী। এর মধ্যেই আগত মানুষদের চন্দনের ফোটা ও হাতে গোলাপ বটম তুলে দিয়ে প্যাকেটের মাধ্যমে পরিবারের সবার উদ্দেশ্যে দুপুরের আহার তুলে দেওয়া হচ্ছে। সব কিছুই চলছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। আগে থেকে কূপন সংগ্রহকারীরা আসার সাথে সাথে অতি দ্রুত অথচ পরম যত্নে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ঘড়ে প্রতিদিন ৩২০/২৫ জন করে। সব মিলিয়ে এই অভিনব আয়োজন, ত্রান বন্টন বা পাশে থাকার কর্মসূচীটি একটি বিয়ে বা উৎসব মুখর পরিবেশের চেহারা নিয়েছে।
আয়োজকদের মধ্যে শ্যামল আদক বললেন,- ত্রান বন্টন বা দান নিতে বহু মানুষ সঙ্কোচবোধ করেন। অথচ সংসার চালাতে তাদের এগুলো বড়ই প্রয়োজন। সেইসব অসহায়দের কথা ভেবেই পরম আত্মীয় সম্মানে আমাদের এই ভাবনা। এর মধ্যেই গত এক মাস প্রত্যহ দুই বেলা এলাকার বারোটি গ্রামের দেড়শতাধিক করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি রান্না-খাবার পরিবেশিত হচ্ছে। এই ভাবে বহমুখী কর্মধারার মাধ্যমে গত দেড় বছর ধরে আমরা করোনা যুদ্ধে সামিল হয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিবন্ধী প্রনব রাউল বললেন,-ফুটপাতে ফলের কারবার করতাম। সব বন্ধ। সংসারে অনটন। তখন এই রকম আয়োজন সংসারে একটু হলেওতো উপকার হচ্ছে !