মলয় দে নদীয়া:- গতকাল রাত দশটা নাগাদ নদীয়া জেলার শান্তিপুর পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁসারী পাড়া এলাকায়, হঠাৎই দুটি পা কেটে যাওয়া এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে রাস্তায় হামাগুড়ি দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরেকে লক্ষ্য করে শান্তিপুরের এক সাংবাদিক!
ভিন্ন ধরনের চলচলের পদ্ধতি দেখে আট-দশটি কুকুর ঘিরে ধরে তাকে। শান্তিপুরের একটি সামাজিক সংস্থা নবজাগরণ রেলওয়ে প্লাটফর্মে থাকা বেশকিছু ভবঘুরেদের নিয়মিত আহার যোগান দেয়, তাই তাদেরকে জানিয়ে শান্তিপুর রেল স্টেশনে পৌঁছে দেয় ওই সাংবাদিক। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় সহযোগিতা চেয়ে মানবিক পোস্টে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় শান্তিপুর প্রতিবন্ধন নামে বিশেষভাবে সক্ষম একটি সংগঠনের সদস্যরা। এরপর আজ সকালে ওই দুই সংগঠনের সদস্যরা একটি ট্রাইসাইকেলে ঘন্টা তিনেকের প্রশিক্ষণে চালানো রপ্ত করিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় রাস্তায়।
নবজাগরণের পক্ষ থেকে রণাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য জানান, নিয়মিত খাবারের দায়িত্ব আমরা নিলাম, চলার ব্যবস্থা করল “প্রতিবন্ধন” তবে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক অতীতে বোধ হয় এই সাইকেল চালানো জানতো, তাই খুব বেশি অসুবিধায় পড়তে হয়নি আমাদের।
প্রতিবন্ধনের পক্ষ থেকে সুজন দত্ত জানান বিশেষভাবে সক্ষম দের নিয়ে, বিভিন্ন অভিজ্ঞতা আমাদের আছে, কুকুরের কামড়ানোর হাত থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমন ইচ্ছা অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে চলাফেরার ফলে ওর মানসিক সুস্থতা ফিরে আসবে অনেকটাই। আপাতত যেটুকু ওর কাছ থেকে জানতে পেরেছি রাজু দাস ওর নাম, বাবার নাম মহন্ত দাস, বছর ১৫ আগে তার দুটি পা রেলে কাটা পড়ে, বাড়ির ঠিকানা না বলতে পারলেও করিমগঞ্জ মনে করতে পারছে শুধুমাত্র। আমাদের সংগঠনের ছেলেমেয়েরা তথ্য ঘেঁটে দেখেছে, নদীয়ায় তো নয়ই এরাজ্যে এমন কোন জায়গা পাওয়া যায়নি এখনো। তবে আসামে এবং বিহারে করিমগঞ্জ নামে দুটি জায়গা পাওয়া পাওয়া গেলেও, কোচবিহার জেলার একটি জায়গাও পাওয়া গেছে। তবে ওর সাবলীল বাংলা শুনে মনে হচ্ছে সেখানেও ওর বাড়ি হলেও হতে পারে, আমাদের ওই জেলার প্রতিবন্ধী সংগঠনের সাথে কথা বলেছি, তারাও চেষ্টা করছে ঠিকানা খুঁজে বার করার। ও আরো কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর, আরেকটু বিস্তারিত তথ্য পেলেই প্রশাসনের সাথে কথা বলে, ওকে বাড়ি ফেরাতে সচেষ্ট হব।