নদীয়ার নবদ্বীপের শিক্ষকরা পাশে দাড়ালেন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর পরিবারের, সহযোগীতায় প্রজ্ঞান

Social

মলয় দে নদীয়া :- সরকারি চাকুরে হোক বা শিক্ষক! এ পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই মাইনে পাচ্ছেন অনেকেই, আর তা নিয়ে সমালোচিত হতে হচ্ছে, প্রকাশ্যে হাটে-বাজারে বা সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু সংখ্যায় কম হলেও এমনো শিক্ষক আছেন যাঁরা এ পরিস্থিতিতে সরাসরি মানুষের পাশে। আবারও  মানবিকতার নজির গড়লেন নদীয়ার নবদ্বীপ উত্তর চক্রের অন্তর্গত চৈতন্য সিআরসির শ্রীচৈতন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

করোনা আবহে দীর্ঘ লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রেল চলাচল ও গণ পরিবহন ব্যবস্থা। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন কল কারখানা সহ একাধিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রেল হকার থেকে শুরু করে সাধারণ রিকশাচালক, টোটো চালক থেকে শুরু করে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ জন। যার ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এইসব দরিদ্র পরিবারগুলি। যার প্রভাব পরোক্ষভাবে পড়তে দেখা গিয়েছে এইসব পরিবারভুক্ত ছোট ছোট শিশুদের মধ্যে। বর্তমানে করোনা মহামারীর প্রভাবে ও দীর্ঘ লকডাউনের কারণে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন বন্ধ রয়েছে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে রান্না করা মিড-ডে-মিল প্রদানের ব্যবস্থা। যদিও লকডাউন জারি হওয়ার প্রথম থেকেই সরকারি নির্দেশ প্রতি মাসে মিড-ডে-মিল বাবদ খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয় বিদ্যালয়গুলিতে। তবুও ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে সেইসব হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে নবদ্বীপ পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীচৈতন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবেদনে “প্রজ্ঞান” নামক নবদ্বীপের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় সংলগ্ন নির্দিষ্ট জায়গা থেকে শ্রীচৈতন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হল দুধ, ডিম সয়াবিন, হরলিক্স, ফল সহ বিভিন্ন ধরনের সুষম খাদ্য সামগ্রী। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছাড়াও এদিন বিতরণী কর্মকাণ্ডে উপস্থিত ছিলেন ওই এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা সাংবাদিক শুভাশিস কংস বণিক ও নবদ্বীপ উত্তর চক্রের শিক্ষাবন্ধু উত্তম পাল। এছাড়াও এইদিনের বিতরণে শিক্ষকদের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজু দেবনাথ, দীপক সরকার সহ অন্যান্য স্বহৃদয়ক এলাকাবাসীরা।বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শ্রীচৈতন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই মানবিক উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই খুশি ওই এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দারা। এই বিদ্যালয়ে যেই সব শিশুরা পড়াশোনা করতে আসে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী পরিবার ভুক্ত। বর্তমান এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও প্রজ্ঞানের সহযোগিতায় আজ এই মানবিক কর্মকাণ্ডে আমরা সামিল হয়েছি বলে এই দিন জানান শ্রীচৈতন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গৌরাঙ্গ চন্দ্র নাথ ও সুমন চ্যাটার্জি।

Leave a Reply