মলয় দে, নদীয়া:- বর্তমানে যা আমাদের কাছে সরস্বতী পূজা বা পুঁথি পূজা, আদিকালে আদিবাসী সমাজে তাই ছিল সিঝান পরব। সিঝান মানে সিদ্ধিলাভ করা। শুধু মাত্র পুঁথি পাঠে সিদ্ধিলাভ নয়, লাঠিচালনা, তীর ধনুক বা অন্যান্য অস্ত্রচালনা শিক্ষাকে সমান গুরুত্বের সাথে মানা হত এই পরবে।
পূর্ব ইতিহাসের মাঘ শুক্ল পঞ্চমীর এই বিশেষ ক্ষনে লোকাচার বা তাদের ভাষায় নেগাচার ছিল পুষপিঠা/উন্ধিপিঠা/বাঁকাপিঠা। যেমন শিক্ষার কোন বয়স নেই বা শেষ নেই তেমনই আহার, নিদ্রা, উপার্জনের মতো প্রত্যেক মানুষের শরীর স্বাস্থ্যচর্চা ও খেলাধুলার প্রয়োজন আছে। এই কথা আজকের না, অনেক দিন আগেই সমাজ উপলব্ধি করেছিলো।
এই পরব এখন অবলুপ্ত প্রায়। সিঝান পরব উপলক্ষ্যে গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর ১নং ব্লকের ভূতপাড়া আদিবাসী গ্রামে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। ভূতপাড়া আদিবাসী ক্লাব ও জাতীয় সেবা প্রকল্প ধুবুলিয়া শ্যামাপ্রসাদ বিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয় । মোট ৩৩ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন এর মধ্যে ৩২ জন জীবনের প্রথমবার রক্তদান করেন। ২৯ জন আদিবাসী যুবক রক্তদান করেন।
ভূতপাড়া আদিবাসী ক্লাবের সম্পাদক শিবু সরদার জানান “সমাজের কল্যাণে আমাদের যুব সম্প্রদায়ের কাজ করে যেতে হবে। আগামী দিনে আমরা আরও কর্মসূচি গ্রহণ করব “।
ধুবুলিয়া শ্যামাপ্রসাদ শিক্ষায়তনের জাতীয় সেবা প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার দীপ কুমার রায় বলেন “সমাজের সবার মধ্যে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সমাজ গঠনে আদিবাসী যুব সমাজের ভূমিকাও কম নয় তা আজ আবারও প্রমাণ করে দিল আদিবাসী যুবক সম্প্রদায়।সবাইকে রক্তদানের জন্য আহ্বান জানাই”।
বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাও রক্তদান শিবিরে যোগদান করেন ।