মলয় দে, নদীয়া : নাম বিভ্রাট কাটাতে “ছ”, “ছো” অবশেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যাপক ড: আশুতোষ ভট্টাচার্য্য ছৌ নাচ নামে অভিহিত করেন, পুরুলিয়ার এই বিশেষ ধরনের নৃত্য পদ্ধতিকে। ছৌ নাচ বিষয়গত ভাবে মহাকাব্যিক।এই নাচে রামায়ণ-মহাভারতের বিভিন্ন উপাখ্যান অভিনয় করে বাজনার তালে নৃত্যের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হয়। কখনো কখনো অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনীর সারবস্তু তুলে ধরা হয় সমাজেরই কল্যানে। এই নাচের মূল রস হলো বীর ও রুদ্র। নাচের শুরুতে একজন গায়ক গণেশের বন্দনা করে, দেবতা , অসুর , পশুপক্ষীর বেশধরে নৃত্য পরিবেশন করেন, প্রতিটি দৃশ্যের শুরুতে ঝুমুর গানের মাধ্যমে, পালার বিষয়বস্তু বুঝিয়ে দেন। নাচের শেষে দুষ্টের দমন ও ধর্মের জয় দেখানো হয়। মুখোশের দ্বারা মুখ ঢাকা থাকলেও,মস্তক বক্ষ উল্লম্ফন এবং পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজনার তালে দেবচাল বীরচাল , রাক্ষসচাল, পশু চাল গুলি স্থানীয় ভাষায় ডেগা ,ফন্দি, উড়ামালট, উলফা, বাঁহি, মলকা, মাটি দলখা প্রভৃতি নামে পরিচিত। এই নাচ তিনটি বর্গে বিভক্ত! পুরুলিয়া জেলার ছৌ, আধুনা ঝাড়খন্ড রাজ্যের সরাইকেল্লা ছৌ, উড়িষ্যা জেলার ময়ূরভঞ্জ ছৌ।
আজও পুরুলিয়া জেলার ৫০- ৬০ টি এইধরনের নৃত্য দল দেখা যায় রাজ্যের এবং রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আমরা সান্নিধ্য পেয়ে ছিলাম, নদীয়ার শান্তিপুরের পূর্ণিমা মিলনীর আয়োজনে।