সরকারের দুয়ারে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক সংগঠন বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার অ্যাসোসিয়েশন 

Social

সোশ্যাল বার্তা: “সরকারের দুয়ারে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকরা” বিভিন্ন দাবী নিয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন অরাজনৈতিক শিক্ষক সংগঠন বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার অ্যাসোসিয়েশন বা বিজিটিএ। গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে জানিয়ে দেন তাঁরা।

গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরির শিক্ষকরা বিগত দুই দশক ধরে আর্থিক দিক থেকে চরমভাবে বঞ্চনার শিকার। তাঁরা জানান এনসিটিই এর নিয়ম অনুযায়ী সারাদেশের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতনের গ্রেড পে যেখানে ৪৬০০ টাকা, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের গ্রেড পে মাত্র ৪১০০ টাকা। বাম আমল থেকে সূচিত এই বেতন বঞ্চনা বর্তমান আমলে শুধু যে বহমান তাই নয়, ষষ্ঠ বেতন কমিশন প্রবর্তনের পর তা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। অন্যদিকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের গ্রেড পে সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গেই সমতা বজায় রেখে ৪৮০০ টাকা করা হয়েছিল।

শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেকেই বলেন- “২০০৯ সালের প্রকাশিত রোপাতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের থেকে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতনের পার্থক্য ছিল যেখানে ৩২১০ টাকা, সেখানে ২০১৯এর রোপাতে সেই বেতন ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ৯২০০ টাকা। এই বেতন বৈষম্য নিরসনে বৃহত্তর গ্রাজুয়েট টিচার্স এ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘ দিন ধরে আইনি পথে এবং গণআন্দোলনের মাধ্যমে লড়াই করে যাচ্ছে।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মাননীয় সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন- “সরকারপোষিত বিদ্যালয়ের সমস্ত শ্রেণীর শিক্ষকদের সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায় ক্যাশ ফেসিলিটি প্রদান এবং নর্মাল সেকশনে নিযুক্ত গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরির শিক্ষকদের অনৈতিক ভাবে আপার প্রাইমারি স্তরে দেখানোর বিরুদ্ধে বিজিটিএ আইনি পথে এবং আন্দোলনের রাস্তায় লড়াই করছে এবং করবে”।

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে গত ২২জুলাই ২০১৯ মহামান্য হাই কোর্ট ‘রিট অফ ম্যান্ডামাস’ জারি করে পে কমিশনকে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। কিন্তু তা কার্যকর করতে সরকার তথা পে কমিশন গড়িমশী করায় বিজিটিএ গত ৩০ আগস্ট প্রায় ২২ হাজার শিক্ষকের উপস্থিতিতে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে বিশাল মিছিল বের হয়ে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউতে মান্যতা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। এরপর ১৩ই নভেম্বর পে কমিশনের সুপারিশ পেশ করা হলেও বেতন বৈষম্যের অবসান কল্পে হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক পে কমিশন কোন পদক্ষেপ না করার জন্য বিজিটিএ হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করে। ইতিমধ্যে শিক্ষকদের জন্য নতুন রোপা প্রকাশিত হয়, কিন্তু সেখানেও গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের পুরোনো গ্রেড পে ৪১০০ ধরেই হিসাব করে বেতন বাড়ানো হয়। গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের অধিকারের দাবিকে হাইকোর্টের রায় মান্যতা না দেওয়ার জন্য বিজিটিএ-র আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্যের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক টিজিটি স্কেলের দাবি না মেটায় গত বছর নভেম্বর মাসে শহীদ মিনার ময়দানে বিজিটিএ ধর্ণা অবস্থানের আয়োজন করে পরবর্তীতে ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ বিকাশ ভবনের সামনে ধর্ণা অবস্থানে সামিল হয় ।রাজ্য সরকার সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্বে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে।

বিজিটিএ’র একজন রাজ্য নেতৃত্ব বলেন “পে কমিশন, গ্রেড পে বৃদ্ধি, টিজিটি স্কেল প্রদান সহ একধিক বিষয় নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে করোনা কালীন স্বাস্থ্যবিধি সমস্ত বিষয় মেনে আগামী কাল অর্থাৎ শুক্রবার থেকেই বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানে সামিল হচ্ছি আমরা । ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা বেরিয়ে পড়েছেন কলকাতার অবস্থান কর্মসূচির উদ্দেশ্যে” ।

ছবি: প্রতীকি

Leave a Reply