উত্তর দিনাজপুর: সালিশি সভায় হাতুড়ে ডাক্তারের হাতে মৃত শিশুকে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকায় বিক্রি করে দিল বাবা। এমনই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ থানার জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জগদীশপুর এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বুধবার করনদিঘি থানার সাবধান এলালার দুর্লভপুর গ্রামের এক হাতুড়ের চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনে ওই হাতুড়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেন শিশুর বাবা উজির মহম্মদ। কিন্তু, কয়েকঘন্টার মধ্যে মত বদল করে শিশুর পরিবার। থানায় লিখিত অভিযোগের পরিবর্তে মৃত শিশুকে ওই হাতুড়ের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার খবর পেয়ে চমকে উঠেছেন রায়গঞ্জ থানার পুলিশ অফিসারেরাও। রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য চৈতন্য হাজদা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, মৃত শিশুর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। সেকারণে সালিশি সভা করে দেড় লক্ষ টাকা ওই চিকিৎসককে দিতে বলেছিল সালিশি সভার মাতব্বররা। সেখানে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকার বিনিময়ে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত চিকিৎসকের হাতে। মৃত শিশুর বাবা উজির মহম্মদ বলেন, “আমার তিন ছেলে এক মেয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। ভিক্ষে করেই চলে সংসার। তাই গ্রামের মাতব্বরদের কথামতো এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা নিয়ে আমার শিশুর মৃতদেহ চিকিৎসকের হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা গরীব মানুষ। আমাদের পক্ষে মামলা চালানো সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, এই মাসের ১৮ তারিখে গভীর রাতে মোমেনুল হক নামে দেড় বছরের শিশুর মলদ্বারে ফোড়া অপারেশন করে হাতুড়ে ডাক্তার রবিউল ইসলাম। অস্ত্রোপচার করার সময় অনবরত রক্তক্ষরণ হলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই শিশুটি মারা যায়। জগদীশপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে অনেকে হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দিলেও পরিবার তা না মেনে গ্রাম্য সালিশীতেই বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছে।