মলয় দে নদীয়া:- নদীয়ার বিস্তৃর্ন অংশের স্বাধীনতা দিবস বা ভারতভূক্তি দিবস পালিত হলো আজ ১৮ই আগষ্ট ৷ প্রসঙ্গত ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও নদীয়ার রানাঘাট, কৃষ্ণনগর এবং নবদ্বীপ সাব ডিভিশন নিয়ে ধোঁয়াশায় থেকে যায় ৷ দিল্লীর মসনদে বসে ভারতবর্ষের মানচিত্রের উপর সীমা রেখা টেনে দেওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষ চরম বিপদে পড়েন ৷ ঘা ঘেঁষাঘেষি করে বসবাস করা মানুষজন হঠাৎই বিদেশী হয়ে হয়ে যান ৷ তখন এই অবান্তর দেশ বিভাগের তীব্র বিরোধীতা করেন শান্তিপুরের মানুষ বাগ্মী পন্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র ৷ মহাপ্রভূর বৈষ্ণবভূমিকে পূর্ব পাকিস্তিনের অন্তভূক্ত না করার জন্য নানা যুক্তি দিয়ে দিল্লীতে জওহরলাল নেহরুকে বোঝাতে সক্ষম হলে পরবর্তীতে ১৭ই আগষ্ট নদীয়ার শান্তিপুর, রানাঘাট, শিবনিবাস, কৃষ্ণনগর এবং নবদ্বীপকে ভারত রাষ্ট্রের অন্তর্ভূক্ত করা হয় ৷ পন্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্রকে সে সময় পূর্ন সহযোগিতা করেন তাঁর ভিন্ন মতাবলন্বীর মানুষ শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায় ৷ ১৭ই আগষ্ট রাত্রে বেতারের মাধ্যমে এই সংবাদ পাওয়ার পর ১৮ই আগষ্ট প্রভাতে রবীন্দ্র সমসাময়িক প্রখ্যাত কবি এবং শান্তিপুরের মানুষ কবি করুনানিধান বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিপুরের ডাকঘরে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ৷ তারপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর গত কয়েক বছর থেকে শান্তিপুরের বেশ কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সমবেত হয়ে দিনটিকে স্মরণ করছেন ৷ গতকাল সকালে ডাকঘরে নেতীজী মূর্তির পাদদেশে একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ ১৮ই আগষ্ট প্রভাতেও ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন প্রায় ৯৫ বছরের বৃদ্ধ এবং বাঁশি শিল্পী ইসরায়েল সেখ কারীকর ৷ পরে শান্তিপুর তথা নদীয়ার বিস্তৃর্ন অংশের স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন সুশান্ত মঠ, রজত প্রামানিক, সঞ্জিত কাষ্ঠ প্রমুখ ৷ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুনীল বঙ্গ, কবিতা আবৃত্তি করেন রীতমা নন্দী এবং সার্থক ঘোষ, নৃত্য পরিবেশন করেন সৃজিতা বসাক ৷ পরে কবি করুনানিধান বন্দোপাধ্যায়ের মূর্তিতেও মাল্যদান করা হয় ৷