নিউজ সোশ্যাল বার্তা : পুরুলিয়া সহ মানভূম অঞ্চলের এই সময়ে সব থেকে বড় পরব হল, বাঁদনা এবং সহরাই পরব। এই পরবের সময়ে বাড়ি গুলিকে নানা ধরনের রং করা হয়,নিকানো মেঝেতে চালগুড়ির নানা রকমের আলপোনা দেওয়া হয়।কার্তিক মাসের অমাবস্যাকে ঘিরে পাঁচ দিন ধরে পালিত হয় বাঁদনা পরব বা সহরায় উৎসব।
কৃষিনির্ভর আদিবাসীদের কাছে গরু, মোষ, গৃহপালিত পশুর গুরুত্ব অপরিসীম। বাঁদনা পরব এদের উদ্দেশেই নিবেদিত। দশেরা বা বিজয়া দশমীর পর থেকে বাঁদনা পরবের প্রস্তুতি শুরু হয়। বাঁদনা পরব-এর গান ‘ওহিরা’ গাওয়া হতে থাকে। ঘরবাড়ি, গোয়ালঘর সাজানো হয়। অমাবস্যার রাতেই গোরু ও কাড়ার (মোষ)-এর সিং–এ তেল দেওয়া হয়। হয় গাই জাগানোর গান, চলে ঝাঁগড় নাচ।
দ্বিতীয় দিন হয় গোয়াল পূজা বা ‘গরয়া’, তৃতীয় ও চতুর্থ দিন যথাক্রমে ‘বাঁদনা’ ও ‘বুড়ি বাঁদনা’ আর পঞ্চম দিন কাড়া’ খুটা। এর মধ্যে গরুকে স্নান করিয়ে নানা রঙে অলঙ্কৃত করা হয়, সিং–এ সিঁদুর দেওয়া হয়, যথাসাধ্য ভালোমন্দ খাওয়ানো হয়। গরু আর মোষের সামনে একটি চামড়া দিয়ে তাদের খেলানো হয়। এই পাঁচ দিন হাল-মই-জোয়াল সব থাকে তুলসিতলায়।কোনও কাজ করা হয় না। শুধু ধামসা মাদল নিয়ে সহরায় গান, নাচ আর হাঁড়িয়া। গ্রামে গ্রামে চাষের কাজে সারা বছর ব্যস্ত থাকলেও বাঁদনা পরবের দিনগুলি আদিবাসীদের সম্পূর্ণ বিশ্রাম থাকে। রাতে গরু ঘুমাবে, মানুষ জেগে থাকবে। কেউ যাতে ঘুমিয়ে না পড়েন সেই জন্য ধামসা মাদল বাজিয়ে বাড়ি বাড়ি জাগরণ করেন আমুদে গ্রামবাসীরা। এদের ঝাঁগড়পার্টী বলে। অমাবস্যার রাতে গো-জাগানোর কাজও করে এরা। গৃহস্থেরা এদের পিঠে মুড়ি দিয়ে খুশি করেন।
(তথ্য ও ছবি: ফেসবুক)