মলয় দে নদীয়া :-শুধু নদীয়া নয়, বাংলা ছাড়িয়ে পুরো ভারতবর্ষে আজ কার্যত গৃহবন্দী। আজ প্রতীকী গৃহবন্দি হলেও, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এভাবেই থাকতে হবে, তা প্রায় এক প্রকার নিশ্চিত হয়েছে প্রত্যেকেই। অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা ছাড়া বন্ধ থাকবে প্রায় সব।
সংসারের প্রয়োজনের, ঊর্ধ্বেও “আমি”কেন্দ্রিক অসম প্রতিযোগিতার অত্যন্ত ব্যস্ততম টাকা উৎপাদনের মানুষটিকেও আজ সারাদিন পরিবারের বন্ধুর মতো সময় দিতে দেখে সবচেয়ে খুশি কনিষ্ঠতম সদস্য। অর্থনৈতিক দায়িত্ব ছাড়া, পারিবারিক কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে অনভ্যস্ত মানুষটি আজ হয়ে উঠেছেন দায়িত্বশীল “বাবা” “দাদা” “স্বামী” সহ নানা প্রকৃত সম্পর্ক।
হির হির করে টানতে টানতে স্কুলে পৌঁছানো, ছবি আঁকা গান ,সাঁতার ,ব্যায়াম, শেখাতে নিয়ে যাওয়া অভিভাবিকা আজ হয়ে উঠেছে “মা”।
নিকট আত্মীয় , অতীতে উপকার করা দুঃসম্পর্কের কেউ, অথবা আগের প্রজন্মের পারিবারিক বন্ধুর সম্পর্কের পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে আজ সকলে হয়ে উঠেছেন মানবিক। বিপদসংকুল এই সময়ে
যৌক্তিকতার ঊর্ধ্বে বেশ কিছু পরিবার প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ অনুযায়ী বাজালেন শঙ্খ, কাঁসর, ঘন্টা, থালা। বন্যা, ক্ষরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা জাতীয় বিপর্যয় সকলে সকলের প্রতি সৌভ্রাতৃত্ব, মঙ্গল কামনায় যৌক্তিকতা প্রয়োজন হয় না, দরকার আন্তরিকতা ভালোবাসা। এ রকম দু-একটি পরিবার থেকে জানা গেল, শহীদের মৃত্যুর পর, মোমবাতি মিছিল, নীরবতা পালন, শোকসভা, স্মৃতিচারণ বা না না সামাজিক ধর্মীয় রীতিনীতির পেছনে একটাই কারণ, সব ভেদাভেদ ভুলে একাত্মকরন। কাঁটায় কাঁটায় তখন পাঁচটা , বেজে উঠলো একসঙ্গে কাঁসরঘন্টা শব্দটা শুধু নিছক শব্দ নয়, করুণ আর্তনাদ!