মলয় দে নদীয়া :- দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সারের ভুগছিল ছেলে অভিজিৎ মন্ডল । ছেলেকে বাঁচানোর জন্য বাড়িটুকু পর্যন্ত বেঁচে দিয়েছেন বাবা দুখিরাম মন্ডল । সম্পূর্ণ নিঃস্ব বনে গিয়েও শেষপর্যন্ত বাঁচাতে পারেননি নিজের ছোট ছেলেকে । মৃত্যু তাকে কেড়ে নিল বাবা-মায়ের কাছে থেকে । যদিও তাতেও দুখিরামের দুঃখ ঘুচলো না । ছেলের মৃতদেহ কীভাবে করবেন সৎকার, হাতে যে কিছুই নেই । কিছু সাহায্য পাওয়ার আশায় নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার থানাপাড়া এলাকার বৃদ্ধ দুখিরাম মন্ডল ছুটেছিলেন বিডিও অফিস এবং পঞ্চায়েত অফিসে । কিন্তু শনিবার দুটি অফিসই ছিল বন্ধ। কীভাবে, কার সঙ্গে তারা দেখা করবেন, বুঝে উঠতে পারেননি । তাই শেষ পর্যন্ত ছেলের মৃতদেহ সৎকারের জন্য খরচ যোগাড় করার উদ্দেশ্যে ভেবেছিলেন কৃষ্ণগঞ্জ হাই স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে ছেলের মৃতদেহ রেখে ভিক্ষা করবেন । কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার কারণে তাও করে উঠতে পারেননি তারা । কান্নায় দুচোখ ভেসে যাচ্ছিল বৃদ্ধ দুঃখীরাম মন্ডল এবং তার স্ত্রী পারুল মন্ডলের ।
ঠিক সেই সময় ভগবানের মতোই তাদের কাছে এসে দাঁড়ালেন কৃষ্ণগঞ্জ থানার ওসি রাজ শেখর পাল । সব শুনে রাজ শেখর বাবু দুখিরাম মন্ডলের হাতে সৎকারের খরচ তুলে দিলেন । টাকা হাতে পেয়ে কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে যান দক্ষিণ মন্ডল, ভাবতেই পারেননি, এমন পুলিশও আছে l
ছেলের মৃতদেহের সৎকার করেন দুখিরাম মন্ডল । পরলৌকিক ক্রিয়ার খরচ ও দেবেন রাজশেখর পাল মহাশয় ।
বৃদ্ধ হলেও দুখিরাম মন্ডলের দুহাত মাথায় ঠেকিয়ে প্রণাম সারলেন । কাকে প্রণাম করলেন, তিনিই জানেন । তবে সেই প্রণাম যেন ভগবানের উদ্দেশ্যে, তা তো বলাই বাহুল্য ।