আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা ! লাভ তো দূরের কথা আসল উঠবে কিনা আশঙ্কায় নদীয়ার আম চাষিরা

Social

মলয় দে নদীয়া:- মালদার পর এ রাজ্যে নদিয়ায় আম চাষির সংখ্যা সর্বাধিক। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে অনেকেই জমা নিয়েছে আম বাগান। তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সার ঔষধ কীটনাশকের খরচা বেড়েছে দ্বিগুণ। আবহাওয়ার খামখেয়ালী তে লাভ তো দুরস্ত, খরচের টাকা, উঠবে কিনা তাই নিয়েই চিন্তায় ভাজ আম চাষীদের। গতকাল ঝরে গাছের অধিকাংশ আম মাটিতে পড়ে গেছে। নদীয়ার হাজার হাজার আম চাষি রয়েছে, যারা প্রতিবছর আম চাষ করেন। এর মধ্যে একাধিক আমচাষী কেউ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কেউবা চড়া সুদে টাকা ধার করে মালিকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সেই আমবাগান জমা নিয়ে আম চাষ করে থাকেন। আমগাছের মুকুল আসার আগে থেকেই শুরু হয় খরচ।

বর্তমান মাটি বায়ু দূষিত হওয়ার কারণে মূল্যবান বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করতে হয় গাছে মুকুল আসার জন্য। এরপর মুকুল আসলে গাছে মধু লাগা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার হাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন ওষুধের ব্যবহার করা হয় তাও অগ্নি মূল্য। আর এই সমস্ত কাজের জন্য দক্ষ শ্রমিক তো পাওয়াই যায়না তাই মোটা টাকা খরচ করে তাদের রাখতে হয় বাগানে। এরপর গাছে আমের গুটি আসলে সেই গুটি ধরে রাখায় নতুন করে চ্যালেঞ্জ থাকে আম চাষিদের মধ্যে। নতুন নামিদামি বিভিন্ন ব্যান্ডের ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু তার মধ্যে যদি বৃষ্টি না হয় সেই আমের গুটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় আম চাষিদের। আবহাওয়া যদি ঠিক থাকে তাহলে কম ওষুধেও ভালো ফলন হয়। কিন্তু আবহাওয়া যদি প্রতিকূল হয় সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করেও সঠিক উপকার পাওয়া যায় না। বর্তমানে সেই সমস্যাই ভুগছে আম চাষিরা। বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও আমের গুটি টেকানো পারেনি চাষি। তার কারণ সঠিক সময়ে বৃষ্টির দেখা নেই। তার ওপর গত কালকের আচমকা ঝড়ো হওয়া সর্বশ্রান্ত করে দিয়ে গেল চাষীদের। গাছের অধিকাংশ আম মাটিতেই পড়ে রইল কোথাও আবার গাছের ডাল কিংবা গোটা আমগাছ টাই ভেঙে পড়ল। তারা জানাচ্ছেন এই সময়ে ৩০-৪০ টাকা কাঁচাআম গাছ থেকে ভেঙে বিক্রি করে থাকেন তারা। কিন্তু ঝরে পড়া আমের চাহিদা থাকে না কারণ একই সঙ্গে হঠাৎ করে প্রচুর বাগান থেকে কুইন্টাল কুইন্টাল আম আমদানি হয় আরত গুলোতে মাত্র ৫-১০ টাকা কেজি তে বিক্রি হতে পারে তবে সেক্ষেত্রে পরিবহন খরচ বাদ দিলে আর কিছুই থাকে না, তাই বাধ্য হয়েই জমি থেকে তিন চার টাকা কেজিতেই বিক্রি করে দিতে হয়। এ বছর এমনিতেই আমের ফলন কম তার উপর ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ গতকাল ঝরে পড়ে গেছে আবারো ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আজ আগামীকাল সহ পরবর্তী দুমাস। তাই আম পাকা পর্যন্ত গাছে কতগুলো আম থাকবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তা তাদের। তবে প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নদীয়ার শান্তিপুর চাপড়া কৃষ্ণগঞ্জ থেকে শুরু করে একাধিক আম চাষীদের এখন চিন্তার ভাঁজ এই আবহাওয়া কারণে।

Leave a Reply