মলয় দে নদীয়া :- পরাধীন ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছিল শত শত বীর শহীদের প্রাণের বিনিময়ে কিন্তু বইয়ের পাতায় মাত্র কয়েক টি নাম সম্পর্কে কয়েক লাইন বাদে আমরা জানি কতটুকু! আর নাম না জানা শহীদদের সংখ্যা তো রয়েছে অজস্র তবে আজ তাদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন করা ভারতবর্ষে বসবাস করে বিশেষ কয়েকটি দিন পালন করলেও তাদের নীতি আদর্শ জীবনযাত্রা কর্মকাণ্ড বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে সামনে আনার সরকারি উদ্যোগ কিংবা বেসরকারি আয়োজন কোথায় ?
তবে নদী কৃষ্ণনগরের ঐকতানে ধরনের চিন্তাভাবনা মাথায় রেখেই প্রচলিত পুঁথিগত শিক্ষার বাইরেও ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গড়ে তুলেছে অবৈতনিক এক শিক্ষা ব্যবস্থা। যেখানে ছবি আঁকা থেকে বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজের সৃজনশীলতা, নদী থেকে পরিবেশ রক্ষায় নানান সচেতনতা শহরে বিভিন্ন মূর্তি ধারাবাহিকতার সাথে পরিষ্কার এবং যত্নে রাখা এ ধরনের নানান কাজে যুক্ত তারা।
সম্প্রতি গতবারই আশ্বিন কৃষ্ণনগর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে র সীমান্তপল্লীতে অরিন্দম দেবের বাড়িতে তাদের এই অবৈতনিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন মনিষীদের মধ্যে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে একটি মূর্তি স্থাপনের কথা থাকলেও একটি দুর্ঘটনার কারণে তা পিছিয়ে আজ করা হয়। আর সেই মূর্তি উন্মোচিত হয় কোনো নেতা বা মন্ত্রী নয় কিংবা কোন জনপ্রতিনিধিও নয়, এক ঝাঁক দেশ বরেণ্য শহীদ পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের হাত দিয়ে।
উদ্বোধনে এলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ,প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বাঘাযতীর, ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, তারকেশ্বর সেনগুপ্ত পরীক্ষিত মুখার্জি, হেমন্ত সরকার দের মতো দেশবরেণ্য ৯ জন বীর শহীদদের পরিবার এবং অনুশীলন সমিতি, সূর্যসেন স্মৃতি রক্ষা কমিটি র মত বেশ কিছু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রগণ্য সংগঠনের কর্মকর্তাগণ।
কিভাবে তাদের একত্রিত করলেন এ প্রসঙ্গে, অরিন্দম বাবু বলেন সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে ওনাদের একটি অনুষ্ঠান দেখে যোগাযোগ করি তবে এর মধ্যে বেশ কয়েকজন আমার পূর্ব পরিচিতও রয়েছে। অন্যদিকে সমস্ত শহীদ পরিবারদের নিয়ে একত্রীকরণ করার প্রথম উদ্যোক্তা বীর শহীদ ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্যের নাতজামাই ফাল্গুনী ঘোষাল জানাচ্ছেন, বহু দৌড়ঝাঁপ করে ভবানী ভবনে তার দাদু শ্বশুরের একটি আবক্ষ মূর্তির অনুমোদন করাতে পারেন বর্তমান রাজ্য সরকারের সহযোগিতায়। আর সেই উদ্বোধনের সময়ে বেশ কয়েকটি শহীদ পরিবারের মানুষ জনের সাথে আলাপ হয় তখনই মাথায় আসে আরও সংগ্রহ করার এরপর একে একে এখন প্রায় সংখ্যাটি ৩৫ এ দাঁড়িয়েছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবক্ষয় রুখতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে সুস্থ মানসিকতা আর তাই আগামী প্রজন্মের কাছে দেশ বরেণ্য বিভিন্ন শহীদদের জীবনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কাউকে দোষারোপ না করে সমস্ত পরিবারের সদস্যরা এ ধরনের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রচার এবং প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করছি তবে এক্ষেত্রেও শুধুমাত্র কয়েকজন নাম জানা শহীদ নয়, অনেক অজানা শহীদদের বীরগাথা খুঁজে পাচ্ছি, তাদেরকে সাথে নিয়ে আগামীতে হয়তো রাজনৈতিক অবমূল্যায়ন সহ নানান সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই উপলক্ষে সারাদিন এবং সন্ধ্যায় নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ।