রিমেল এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে সুন্দরবনের কুমিরমারী দ্বীপে দিশারির সদস্যরা

Social

সোশ্যাল বার্তা: সুন্দরবনের কুমিরমারী দ্বীপ ! রিমেল এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চার ঘন্টা জলপথ দিয়ে নদীয়ার আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন দিশারির প্রতিনিধিরা রবিবার পৌঁছে গেল এই দ্বীপে। ঘূর্ণিঝড় যশ এর সময়ও গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছিল দিশারী। এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আদিবাসী মানুষ এবং সাধারণ মানুষ বসবাস করেন।

কাজ করতে করতে সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের আবেদনে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে পাশে থাকার চেষ্টা করে। দিশারী পরিবারের উদ্যোগে প্রতিবছর পালিত হয় বিশ্ব আদিবাসী দিবস ‘শিকড়ের টানে’। উদ্দেশ্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিল্প-সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার।ইতিমধ্যে কুমিরমারী দ্বীপে হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছে সংগঠনেরবৃন্দ। প্লাস্টিক মুক্ত দ্বীপ এই স্লোগান উঠিয়ে মানুষকে সজাগ করছে প্রতিনিয়ত।

এখানে বাস করেন প্রায় হাজারেরো বেশি আদিবাসী। সুন্দরবনের আদিবাসীদের নিজ রাজ্য ছেড়ে এ রাজ্যে নিয়ে আসার এক ঐতিহাসিক কাহিনী আছে যার সূত্রপাত হয়েছিল ইংরেজ সরকারের হাত ধরে। সুন্দরবনের আদিবাসীদের আনা হয়েছিল ভূমি সংস্কারের কাজে। ভাবতে অবাক লাগে যারা এই ভূমি সংস্কারের মাধ্যমে বাঘের পেটে গিয়ে গভীর জঙ্গলকে আবাদী জমিতে পরিণত করল তারাই আজ ভূমি থেকে বঞ্চিত। এরা মূলত চাষবাস আর মাছ ধরে তাদের জীবিকা চালায়।
বারনবার নোনা জল জমিতে ঢোকে অন্যদিকে নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে ফলে চাষবাস বন্ধ তাই ইতিমধ্যে বহু মানুষ পেটের দায়ে আইল্যান্ড ছেড়ে ভিনদেশে গেছেন কাজের তাগিদে। আইল্যান্ডের শিশুরা কেউ মা-বাবার সাথে অন্য দেশে পাড়ি দিয়েছে, কেউ আবার আত্মীয়র কাছে পড়ে রয়েছে এই দ্বীপে ফলে এদের পড়াশোনা স্বাস্থ্য সংস্কৃতি সবটাই বেশ ক্ষতি হচ্ছে দেখে কলতানের একটি শাখা দ্বীপে স্থাপিত করা হয়। যেখানে আদিবাসী শিশুদের শিল্প,শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা হয়। শিশুরা বাদ্যযন্ত্র যেমন ধামসা মাদল সাথে ঝুমুর গানের শিক্ষা নেয় এই বিদ্যালয়ে । যদিও বর্তমানে সেখানে আদিবাসী শিশুদের সাথে সাথে সাধারণ শিশুদের ভিড় জমতে শুরু করেছে।‌

দিশারী সংস্থার প্রচেষ্টায় এখানকার আদিবাসী শিল্পীদের আজ ভারত সরকারের সেন্ট্রাল বিউরো অফ কমিউনিকেশনের অন্তর্গত সং এন্ড ড্রামা ডিভিশনে শিল্পী হিসাবে তাদেরকে নথিভুক্ত করাতে পেরেছেন। সুন্দরবনে এই ঘটনা প্রথম।

ছাদ বিহীন ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়িগুলোতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর (শুকনো খাবার ,মশারি , মহিলাদের শাড়ি, শিশুদের জন্য ওষুধপত্র ও পড়াশুনার সামগ্রী)পাশাপাশি ত্রিপল তুলে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply