বাইকের ইঞ্জিন দিয়ে প্যারাগ্লাইডার বানিয়ে আকাশ উড়লেন নদীয়ার এক রাজমিস্ত্রি

Social

মলয় দে নদীয়া :-কথায় বলে বামন হয়ে চাঁদের স্বপ্ন দেখা! তবে সত্যিই কি স্বপ্ন দেখতে নেই? নাকি স্বপ্ন দেখার মধ্যে দিয়েই তৈরি হয় তা বাস্তবায়িত করার জেদ এবং ইচ্ছে শক্তি! সে যাই হোক না কেন বড় স্বপ্ন থাকলে সমস্ত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় তা আরো একবার প্রমাণ হয়ে গেল নদীয়ার ধানতলার থানার অন্তর্গত দলুয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা পার্থ মন্ডল। বয়স তার ২৪ বছর পেশায় সে একজন রাজমিস্ত্রি। তবে ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছে ছিল আকাশছোঁয়ার! পারিবারিক আর্থিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রতিকূলতার মধ্যে দমে যাইনি সে। আর সেই কারণেই সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে দীর্ঘ ছয় বছরের চেষ্টায় সে বানিয়ে ফেলল এক অভিনব প্যারাগ্লাইডার। তার এই কীর্তি দেখে হতবাক সকলেই!

দলুয়াবাড়ি কালিপুর শিক্ষায়তন থেকে ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে পার্থ মন্ডল। এরপর সংসারের হাল ফেরাতে নিজের গ্রামেই সে শুরু করে রাজমিস্ত্রির কাজ। আর সেই ফাঁকেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য নিজের উপার্জন করা অর্থ দিয়েই খানিকটা জমিয়ে ধীরে ধীরে কিনতে থাকে আকাশ জানতি তৈরি করার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। সে জানায় সম্পূর্ণ যানটি তৈরি করতে প্রায় দু লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে তাকে।

বিশাল আকৃতির প্যারাসুট লাগানো অভিনব এই আকাশযানটি নিয়ে নিজের ইচ্ছের মতো আকাশের কোলে ভেসে বেড়ানো যাবে বলে জানিয়েছে ওই যুবক। ৮০ কিলো ওজন বিশিষ্ট ২২৪ সিসির একটি মোটর বাইকের ইঞ্জিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই আকাশযানটি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে ছয় বছর পরে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পেরে খুশিতে উচ্ছ্বাসিত বর্তমানে সে এবং তার পরিবার। সংসারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো না থাকার কারণে প্রতিদিনই জীবনযুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে তাকে অর্থ উপার্জনের জন্য। তার পাশাপাশি ধীরে ধীরে এগিয়ে চলে সে তার স্বপ্নের দিকে।

বর্তমানে এই আশ্চর্য আকাশ গানটি দেখতে ভীড় করছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে দূর দূরান্ত থেকে আগত মানুষজনেরা। আপাতত এই আকাশীতে বসার জায়গা রয়েছে একজনারী তবে পার্থ জানায় আগামীতে চালকের পাশাপাশি আরও একটি সিট সে রাখতে চায়। তাতে তার পাশাপাশি সেতার পরিবারের সদস্য এবং প্রিয়জনদেরও আকাশ ভ্রমণ করাতে পারে।

আশ্চর্য এই আকাশ যানটি বানাতে কোন কারিগরি শিক্ষা সে নেয়নি এমন কি ছিল না কোন প্রথাগত ট্রেনিংও। সে জানায় শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া ভিডিও দেখেই ধীরে ধীরে সে বানিয়ে ফেলেছে অভিনব এই প্যারাগ্লাইডার।

Leave a Reply