প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের ! গ্যাসে অথবা কাঠের আগুনে শুকাতে হচ্ছে প্রতিমা

Social

মলয় দে নদীয়া :-সূর্য মুখ লুকিয়েছে চার দিন, কাশের বন ভিজেছে ঘন বর্ষায়।

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে,নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি চলছে। আগামী ২৪ – ৩৬ ঘন্টাতেও রাজ্যজুড়ে একইরকমই আবহাওয়া পরিস্থিতি থাকবে। শুক্রবার রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গে কিছু অংশে এবং শনিবার বাকি অংশ থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কিছুটা কমলেও সম্পূর্ণ শুষ্ক আবহাওয়া পেতে এখনো দেরি আছে।
তবে পুজো আর বেশি দিন নেই। যে পরিমাণে ঠাকুর বানানোর অর্ডার নিয়েছেন শিল্পীরা তা সময় মতন দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পালনে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে নিম্নচাপ। বেশ কয়েক মাস আগে থেকে দূর্গা প্রতিমার কাঠামো তৈরি বাধা এবং মাটির প্রলেপ লাগানো শুরু হয়ে গেছিলো প্রথম দিকের অর্ডার অনুযায়ী । সেগুলো অবশ্য শুকিয়ে গেছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্ডার অনুযায়ী ঠাকুরের সবেমাত্র মাটি লাগানো চলছিলো। তারই মধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে এলো। বিগত এই চার দিন ধরে প্রথমের অর্ডার অনুযায়ী শুকানো মূর্তির প্রাথমিক রং শেষ করার পর মাথায় হাত মৃৎশিল্পের। নিজেদের কারখানার তো বটেই দুর্গা পূজা উপলক্ষে আরো বেশ কিছু শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে কিন্তু তাদের করার জন্য কোনো কাজ নেই। ছাউনি যুক্ত কারখানায় ভিড়ে গাদাগাদি করে রয়েছে সমস্ত প্রতিমা। বাইরে রৌদ্রে শোকানোর জন্য থরে থরে সাজানো প্রতিমা কোনরকমে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে রয়েছে পথের পাশে। এভাবে চলতে থাকলে সে প্রতিমা গুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে নতুন কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না আবহাওয়ার কারণে। এই আবহাওয়ায় মাটি শুকাতে লেগে যায় অনেক সময়। তাই বাধ্য হয়েই মৃৎশিল্পীরা ব্লো বার্নার লাইট ব্যবহার করে শুকানোর চেষ্টা করছেন প্রতিমা। কিন্তু গ্যাসের যা দাম, তাতে এক একটি ঠাকুর শোকাতেই লেগে যায় একটি পূর্ণসিলিন্ডার অর্থাৎ বাড়তি প্রায় হাজার হাজার টাকা খরচা। তাই কিছুটা সামঞ্জস্য রক্ষা করতে কাঠের আগুন করেও প্রতিমা শুকানোর কাজ করছেন তারা। প্রতিমার গায়ে এভাবে আগুন দেওয়ায় কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগলেও মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, প্রতিমার চক্ষু দানের আগে তা নিছকই মূর্তি মাত্র। প্রাণ প্রতিষ্ঠা পায় চক্ষু দেওয়ার পরে তাই এই কাজটা একদম শেষে করা হয়। তার থেকেও বড় কথা এ বিপদের সময়, তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করতে না পারলে, অর্ডার অনুযায়ী প্রতিমা দেওয়া সম্ভব হবে না। আগের মতন চতুর্থী বা পঞ্চমীতে ঠাকুর নেওয়ার রীতি নেই। এখন অনেকেই আগেভাগে নিয়ে যান ঠাকুর তা বাদে বিপুল সংখ্যক ঠাকুর রাখার জায়গাও যথেষ্ট অসুবিধা তাই তারাও চান আগেভাগেই মায়ের রওনা। তবে মীর শিল্পীদের থেকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে মন্ডপসজ্জা নির্মাতাদের। তারা এখন আকাশের দিকে চেয়ে রয়েছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য।

Leave a Reply