অভিজিৎ হাজরা, বাগনান, হাওড়া :-বর্ষা শুরু হতেই গ্ৰাম বাংলায় লোকালয়ে দেখা মিলছে বিষধর সাপেদের।
গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার বাগনান থানার অদূরে ধরা পড়ল বিশালাকার একটি চন্দ্রবোড়া (BIG SNAKE RECOVERY)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাগনান থানার অদূরে বাগনান বাস স্ট্যান্ডের পিছনে মুরালীবাড় গ্ৰামের বাসিন্দা দেবাশীষ মান্না বাড়ির লাগোয়া তার নিজের বাগান জাল দিয়ে চারিদিক ঘিরে রেখেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা সকালে সাপের ফোঁস ফোঁস আওয়াজ শুনতে পাওয়ায় সেই আওয়াজের উৎস খুঁজতে খুঁজতে দেবাশীষ মান্নার বাড়ির লাগোয়া বাগানের কাছে এসে দেখেন, বাগানের জালে একটি বিশালাকার সাপ আটকে পড়েছে। তারই ফোঁস ফোঁস আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। সাপটিকে দেখে এলাকাবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।প্রায় ৫ ফুটের বেশি লম্বা এবং স্থুলকার শরীরের চন্দ্রবোড়া এযাবৎকাল এলাকায় কখনো দেখা যায়নি বলে এলাকাবাসীরা দাবি করেন। সাপটিকে দেখে এলাকাবাসীর কয়েকজন মারতে উদ্যত হন। বাড়ি ও ওই বাগানের মালিক দেবাশীষ মান্না এবং এলাকাবাসীদের কয়েকজন সাপটিকে না মেরে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যোগাযোগ করেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের স্থানীয় সদস্য ও কর্মী চিত্রক প্রামাণিক এর সঙ্গে।
চিত্রক প্রামাণিক এই সংবাদ পাওয়া মাত্রই পরিবেশ মঞ্চের আরও এক সদস্য ও কর্মী সুমন্ত দাস এর সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে যান।চিত্রক ও সুমন্ত দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত সাপটিকে উদ্ধার করে।তবে সাপটিকে উদ্ধার কাজের সময় সাপটি যাতে কোন রকম আঘাত প্রাপ্ত না হয় সেদিকেও খেয়াল রেখে চিত্রক ও সুমন্ত সাপটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাঁরা ও স্বীকার করেন,এতবড় পূর্ণ বয়স্ক চন্দ্রবোড়া সাপ সচারচ এলাকায় দেখা যায় না।চিত্রক ও সুমন্ত বলেন, আমাদের এতদিনের জীবনে এত বড়ো চন্দ্রবোড়া (RUSSELL ‘S VIPER) দেখি নি। তাঁরা বলেন,বর্ষায় চারিদিক ডুবে যাওয়ার কারণে সাপটি সম্ভবত তাঁর পুরানো আস্তানা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে অন্য আস্তানা খোঁজার সময় আস্তে গিয়ে দেবাশীষ বাবুর বাগানে ঘিরে রাখা জালে আটকে গিয়েছিল। কোনো ব্যক্তি সাপটির সংস্পর্শে আসলে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারতো। তবে সময়মতো সাপটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করায় সেটি এযাত্রায় প্রাণে বাঁচলো। পরিবেশ মঞ্চের কর্মী চিত্রক ও সুমন্ত বলেন,সাপ বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।একে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। বর্তমানে মানুষ বন্যপ্রাণী,পশু, পাখি উদ্ধার ও বাঁচানোর জন্য যে সচেতন হচ্ছে এটাই খুশির খবর।