দারিদ্রের মধ্যে দুর্দান্ত ফল করেও দুশ্চিন্তায় কাইফ!মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন পরিবারের

Social

দেবু সিংহ,হরিশ্চন্দ্রপুর:বাবা দিনমজুর,মা গৃহবধূ।পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।টালির ছাউনি দেওয়া কাঁচা বাড়ি থেকে পড়াশোনা করে সাফল‍্যের শিখরে পৌছালেন দিনমজুরের ছেলে মহম্মদ কাইফ।আরও একবার তিনি প্রমাণ করে দিলেন,ইচ্ছা থাকলে প্রতিকূলতা সাফল‍্যের বাধা হতে পারেনা।উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবছর হরিশ্চন্দ্রপুর সার্কেলে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কাইফ বলে জানা গেছে।তার সাফল্যে গর্বিত বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষক-‌শিক্ষিকা থেকে শুরু করে গ্রামবাসী সকলে।

জানা যায়, কাইফের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের রাঙ্গাইপুর বটতলা এলাকায়।দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে সে।তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪৭৪।বাংলায় পেয়েছে ৮০,ইংরেজিতে ৯৩, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে‌ ৯৬,দর্শনে ৯৭,ইতিহাসে ৯৩ এবং ভূগোলে ৯৫।

তবে দুর্দান্ত ফল করেও দুশ্চিন্তায় পড়েছে কাইফ ও তার পরিবার।কাইফের ইচ্ছে ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা।নুন আনতে পান্তা ফুরনো এই পরিবারের কাছে কলেজে পড়ার খরচ জোগাড় করা খুবই কষ্টসাধ্য।তাই মুখ্য মন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন কাইফের পরিবার।কৃতি ছাত্র কাইফ জানান,বাবা দিনমজুর।সামান্য আয়ে সংসারের খরচ জোগাড়ের পাশাপাশি পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয় বাবাকে।অর্থের অভাবে বাবা সাইকেল কিনে দিতে পারেননি।অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুল যেতে হয়েছে।নবম শ্রেণিতে সবুজ সাথীর সাইকেল পাওয়ার পর থেকে সেই সাইকেল নিয়ে স্কুল যেত। পড়াশোনার ফাঁকে বাবার সঙ্গে মাঠে দিন মজুরের কাজও করতো সে।পড়াশোনাতে বাবা মা ও স্কুল শিক্ষক-‌শিক্ষিকারা তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে।এই সাফল্যের পিছনে তাদের অবদান অনস্বীকার্য।ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার ইচ্ছে রয়েছে তার।তবে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা তার জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।যদি কোনো বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা রাজ্য সরকার তার পাশে দাঁড়ায় তাহলে তার স্বপ্ন পূরণে কোনো বাধা থাকবে না।বাবা তৈয়ব আলী জানান,উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলে স্কুলের সব থেকে বেশি নম্বর পাওয়ায় গর্ব যেমন হচ্ছে,তেমনই আশঙ্কা হচ্ছে এর পর কী ভাবে ছেলেকে কলেজে পড়াবেন।সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না।রাজ্য সরকার ছেলের পড়াশোনার খরচ দিয়ে সাহায্য করলে স্বপ্ন পূরণে কোনোরূপ বাধা থাকবে না ছেলের।

Leave a Reply