দেবু সিংহ, মালদা: পেঁপে চাষ করেই বছরে আয় করছেন আড়াই লক্ষ টাকার বেশি। কোথাও নিয়ে মেতে হচ্ছেনা, বাগান থেকেই নিয়মিত বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। ব্যবসায়ীরা পেঁপে বাগানে এসে নিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পেঁপে। গত কয়েক বছর ধরে আমবাগানের মধ্যে বিকল্প চাষ হিসাবে পেঁপে গাছ লাগিয়েছিলেন শিশু ওড। এখন তিনি সেই বাগান থেকেই অতিরিক্ত বছরে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা রোজগার করছেন।
আমবাগানের মধ্যেও যে অন্য কোন লাভজনক ফসল চাষ করা যায় তার পথ দেখাচ্ছেন মালদহের রতুয়া থানার বাহিরকাপ গ্রামের বাসিন্দা শিশু ওড। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনা ছেড়েছিলেন তিনি। তারপরেই বাবার কৃষি কাজে হাত লাগান। নিজের প্রায় তিন বিঘে আম বাগান রয়েছে। বছরের এক সময়ে আম বাগান থেকে রোজগার হয়। তাই আম বাগানের ভেতরে বিকল্প ফসল চাষের চিন্তাভাবনা শুরু করেন। সেখান থেকেই পেঁপে চাষের আইডিয়া আছে। আম বাগানের মধ্যেই ফাঁকা জায়গায় পেঁপে গাছ লাগিয়ে দেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করায় গত কয়েক বছরেই পেঁপে চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন তিনি। তিন বিঘে আমবাগানেই নির্দিষ্ট দূরত্বে পেঁপে গাছ রয়েছে। সেখান থেকেই আয় হচ্ছে তার। সাধারণত বাজারে পাকা ও কাঁচা দুই ধরনের পেপেরি চাহিদা রয়েছে। তবে তিনি কাঁচা পেঁপেই বেশি বিক্রি করেন। এই বছর পাকা পেতে বিক্রি করছেন। বর্তমানে বাজারে এক কেজি পাকা পেঁপে ৩০ টাকা ও কাঁচা পেঁপে কুড়ি টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতেই মাসে রোজগার কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা।
সারা বছর ধরেই পেঁপে চাষ করা যায়। তবে পেঁপে চারা বসানোর উপযুক্ত সময় মার্চ মাস। শিশু ওড উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপে চারা নিজের বাগানের বসান। বাইরে থেকে নিয়ে আসেন এই পেঁপের চারা। নিয়মিত জল ও পরিচর্যা করলেই পেঁপে গাছ মানুষ হয়ে যায়। তবে পেঁপেতে ভাইরাসের আক্রমণ সবথেকে বেশি। এই ভাইরাসের হাত থেকে পেঁপে গাছ ও পেঁপে কে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে পরিচর্যা কীটনাশক প্রয়োগ। একবার ভাইরাসের হাত থেকে পেঁপে গাছকে রক্ষা করতে পারলেই ব্যাপক পরিমাণে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিশু ওড বলেন, আমার দেখাদেখি আশেপাশের বেশ কয়েকজন কৃষক পেঁপে চাষের চেষ্টা করেছেন আম বাগানের মধ্যে। কিন্তু তারা সফল হননি। কারণ পেঁপে গাছকে ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। সে সময় গাছের পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে হয়। একবার ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে ভালো আয় হয় এই ফসল থেকে।
মূলত আম চাষ প্রধান। তবে জমি ফাঁকা জায়গা ফেলে না রেখে পেঁপে চাষ শুরু করেছিলেন শিশু বাবু। এখন তিনি পেঁপে চাষ করে বছরে ব্যাপক আয় করছেন। যার জেলার অন্যান্য কৃষকদের অনুপ্রাণিত করছে।