দেবু সিংহ, মালদা: বাড়ি থেকে কার্যত জোর করেই এক পরিযায়ী শ্রমিককে ভিনরাজ্যে নিয়ে গিয়েছিল এক ঠিকাদার৷ কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনোর পরদিন থেকেই তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই৷ ঠিকাদারের দাবি, ওই শ্রমিক বিশাখাপত্তনমে ট্রেন থেকে নেমে পড়েছিলেন৷ দু’দিন পর কাজের জায়গায় তাঁর খোঁজ মিলবে৷ সেকথা শুনে বাড়ির লোকজন তাঁর কর্মক্ষেত্রেও ছুটে যান৷ কিন্তু তাঁর কোনও সন্ধান মেলেনি৷ এরপর পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় থানায় ঠিকাদারের অভিযোগ দায়ের করেন৷ তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের আর্জিতে কান দেয়নি৷ তাই তাঁরা পুলিশ সুপার, এমনকি জেলা আদালতেও অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসেননি৷ এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়েছে পুরাতন মালদা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শপল্লি এলাকায়৷ পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পিছনে ওই শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদারের হাত রয়েছে৷
নিখোঁজ ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম সঞ্জয় মণ্ডল (৩৫)৷ বাড়িতে বাবা চমৎকার মণ্ডল, মা মিনতি মণ্ডল, স্ত্রী রাখিদেবী ছাড়াও রয়েছে দুটি নাবালিকা মেয়ে৷ পুলিশকে মিনতিদেবী জানিয়েছেন, গত ৭ নভেম্বর ভোর পাঁচটা নাগাদ ইংরেজবাজারের যদুপুর গাবগাছি এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফা শেখ ওরফে মামুন তাঁর ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়৷ মামুন ভিনরাজ্যে শ্রমিক সরবরাহ করার ঠিকাদার৷ অসুস্থ ছেলে ভিনরাজ্যে যেতে চাইছিল না৷ মামুন তাকে জোর করে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়৷ তারপর থেকে তাঁরা ছেলের আর কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না৷ তাঁদের সন্দেহ, মামুন তাঁর ছেলেকে গোপন কোনও ডেরায় আটকে রেখেছে৷
মিনতিদেবীর বক্তব্য, ‘আড়াই মাস ধরে ছেলের কোনও খোঁজ পাচ্ছি না৷ মামুন বলেছিল, ও নাকি ট্রেন থেকে বিশাখাপত্তনমে নেমে গিয়েছে৷ দু’দিন পর কর্মক্ষেত্রে ওকে পাওয়া যাবে৷ আমরা সেখানে গিয়েছি৷ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছি৷ ছেলেকে পাইনি৷ আমার ধারণা, মামুনই ছেলেকে কোথাও আটকে রেখেছে৷ ওর বিরুদ্ধে মালদা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি৷ কাজ না হওয়ায় পুলিশ সুপার, এমনকি আদালতে অভিযোগ করেছি৷ কিন্তু এখনও ছেলের সন্ধান পাইনি৷ আমি চাই, আমার ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হোক৷’