মলয় দে নদীয়া :-শীতে কম দামের প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ আনাজ বলতে সীম অন্যতম। এ প্রজন্মের অনেক কাছে প্রিয় না হলেও, গুনাগুন সম্পর্কে ডাক্তারের পরামর্শ পেলে আগ্রহী হবে তারাও। প্রতি ১০০ গ্রাম শিমে ৮৬ দশমিক ১ গ্রাম জলীয় অংশ আছে। শিমে খনিজ উপাদান আছে ০ দশমিক ৯ গ্রাম, আঁশ ১ দশমিক ৮ গ্রাম ও ক্যালোরি বা খাদ্যশক্তি আছে ৪৮ কিলো ক্যালোরি। এছাড়াও শিমে ৩ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিন, ৬ দশমিক ৭ গ্রাম শর্করা, ২১০ মি.গ্রাম ক্যালসিয়াম ও ১ দশমিক ৭ মি.গ্রাম লৌহ পাওয়া যায়। এসব উপাদান ছাড়াও শিম জিঙ্ক, ভিটামিন সি ও নানা রকম খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ । নিচে শিমের ১০ উপকারিতা জেনে নিনঃ-
১। গর্ভবতী মহিলা ও শিশুর অপুষ্টি দূর করতে শিম বেশ কার্যকারী।
২। খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ায় শিম চুল পড়া কমাতে ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৩। কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করে ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৪। নিয়মিত শিম খেলে তা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৫। শিমে সিলিকনজাতীয় উপাদান আছে যা হাড় সুগঠিত করে।
৬। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিম সাহায্য করে।
৭। নিয়মিত শিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসে।
৮। শিমের ফুল রক্ত আমাশয় দূর করতে সাহায্য করে।
৯। এ সবজিতে ভিটামিন বি সিক্স বেশি পরিমাণে থাকায় তা স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ রাখে ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
১০। এ ছাড়াও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তবে শুকনো সিম, বিশেষত মাঘ মাসের পর আর খাওয়া উচিত নয়। কারণ সে সময় সায়ানোজিক গ্লুকো সাইড জমা হয় ফলের মধ্যে। যা ক্ষতিকারক।
তবে সিমের বীজ আরো বেশি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু।
নদীয়া জেলার হরিণঘাটার কাষ্ঠ ডাঙায় জেলার সর্বাধিক চাষ হয়ে থাকে। এবছর আনুমানিক দুই হাজার কুড়ি একর জমিতে চাষ হয়েছে সীম। এছাড়াও ভাগীরথী তীরবর্তী শান্তিপুরেও সীমও জেলা পেরিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছায়। তাই বিভিন্ন চাষের জমিতে সাত সকালে সবুজ সীমের মাচা থেকে তা সংগ্রহ করার ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায় এ সময়। ঘন সবুজ ফল হলেও গাড় বেগুনি রংয়ের ফুল, শীতের চাষের মাঠ শোভা বর্ধন করে।
তবে কৃষকরা জানাচ্ছেন, অত্যাধিক পরিমাণে সারের মূল্য বৃদ্ধি এবং নিত্য নতুন রোগের প্রাদুর ভাবে উপযুক্ত কীটনাশক স্বল্প মূল্যে না পাওয়ার কারণে , লাভ পাচ্ছেন না তারা।