নিউজ সোশ্যাল বার্তা, প্রীতম ভট্টাচার্য : কার্তিক মাসের শেষ ও অগ্রহায়ন মাসের শুরু থেকে শুরু হয় ইতুপুজো। গ্রাম ও শহরের এটি লোকায়ত পুজো, এই পুজো প্রতিটি ঘরে গৃহ লক্ষী হিসাবে পুজিত ইতু। বাড়ির মহিলারা খুব নিষ্ঠার সাথে এই পুজো করে থাকেন। নতুন বীজ বপন করে চলে এই পুজো।
মাটির সরার মধ্যে নতুন ধান, ছোলা, মটর, দিয়ে তাতে ঘট বসিয়ে নতুন মুলো আরও ফল, ফুল সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে ইতু পুজো করা হয়। একমাস ধরে এই ব্রতপালনী চলে প্রতিটি ঘরে ঘরে।অগ্রহায়নের শেষে নদীতে এই ঘট বিসর্জন দিতে হয়। জলঙ্গী নদীতে এই ঘট বিসর্জন দিতে এলেন অনেকেই, নিষ্ঠার সাথে ফুল, ঘট নদীতে বিসর্জন দিলেন। কৃষ্ণনগরের অনেকগুলি ঘাট রয়েছে ।
ইতু পূজা উপলক্ষে ঘাট গুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো । সব ঘাট গুলিতে এখনো ফুল , মালা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই । জলঙ্গি নদী কে দূষিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেভ জলঙ্গি (নদী সমাজ) । তাদের উদ্যোগে সবচেয়ে বড় বিসর্জন ঘাটে প্রশাসনের সহযোগিতায় এই ফুল, মালা গুলি ফেলার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গায় করা হয়েছে।
চড়কতলা নিবাসী, ঘাটের পাড়ে বসবাসকারি রমেন সরকার বললেন ” সেভ জলঙ্গি (নদী সমাজের) কাছে আবেদন তারা যদি বিসর্জন ঘাট এর মত আমাদের এখানেও ঐরকম ফুল মালা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করেন তাহলে জলঙ্গি দূষণ অনেকটাই কম হবে “। সবিতা দাস বললেন “নদী দূষণ প্রতিরোধ করতে যারা স্বেচ্ছায় কাজ করে চলেছেন তাদের সদস্যরা যদি অনুষ্ঠানের সময় অন্যান্য ঘাটগুলোতেও নজরদারি বাড়ায় তাহলে দূষণ অনেকটাই কমবে বলে আমার মনে হয় ।
এই প্রসঙ্গে সেভ জলঙ্গি নদী সমাজের সদস্য শ্রী প্রদীপ রায় জানালেন যে,”এবছর ইতু পুজো বিসর্জন উপলক্ষে বিসর্জন ঘাটের পাশাপাশি খেয়াঘাট ও সারদা ঘাটে আমরা নজরদারি চালিয়েছি। সাধারণ মানুষের কাছে নদীতে ফুল,বেলপাতা নিক্ষেপ না করার আবেদন রাখলে তাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়।অনেকে খুশিমনে সহযোগিতা করলেও অধিকাংশ মানুষ এই আবেদনে কর্ণপাত করেননি। এই বিষয়ে আমাদের দাবি প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে নদীদূষণ ঠেকাতে। বিসর্জন ঘাটের মতো সমস্ত ঘাটগুলিতে আবর্জনা পাত্র বসাতে হবে।”