অরহড়ের ডালের খিচুড়ি ভোগ ! মায়ের বাহন ঘোটক এবং বুলেনের সাজের বিশেষত্ব নিয়ে সাহা পাড়া বুড়ো বারোয়ারী

Social

মলয় দে, নদীয়া :- নদীয়ার শান্তিপুর শহরের বর্তমান ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সাহাপাড়া এলাকার তৎকালীন পাড়ার ছেলেরা গঙ্গার ঘাটে স্নানে গিয়ে লক্ষ্য করেন সুবিশাল এক পুজোর কাঠের পাট ভেসে আসছে গঙ্গাবক্ষে, তা তুলে নিয়ে সেই প্রথম আজ থেকে ১২৯ বছর আগে ১২৯৯ সনে পুজো হয়েছিল মা দূর্গার। এ পূজার বৈশিষ্ট্য কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ীর মত মা দুর্গার বাহন হিসেবে সিংহ নয় ঘোটক থাকে সম্পূর্ণ বৈষ্ণব মতে আখ কুমড়ো বলি দিয়ে মা পূজিত হন এখানে। পুজোর ব্রাহ্মণ, মৃৎশিল্পী এবং বাজনদার বংশপরম্পরায় প্রতিবছর উপস্থিত হন। মায়ের উদ্দেশ্যে নিবেদিত খিচুড়ি ভোগ এই পূজার অপর এক বিশেষত্ব, যে ভোগ পেতে সারা শান্তিপুর উদগ্রীব হয়ে থাকে ।

সাহাপাড়া বুড়ো বারোয়ারির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো মায়ের সাজসজ্জা। এক মাস আগে থেকে পাড়ার ছোটরা যুবক সম্প্রদায় এবং বৃদ্ধরা পালা করে থার্মোকলের উপর “বুলেন” পুথি, চুমকি, কার সুসজ্জিত করেন যেকোনো আঠা দিয়ে নয়! মোম বিরোজের আঠা অর্থাৎ মোমের সাথে পাইন গাছের আঠা মিশিয়ে। এই বিশেষ ধরনের আঠার এক অসাধারণ গন্ধে গোটা পাড়ায় জানান দেয় পুজো আসন্ন। ঠাকুরের পিছনে চালি প্রতিবছর নিত্যনতুন ডিজাইনের সুসজ্জিত হয়। পঞ্চমীর দিন রাত পর্যন্ত সাজসজ্জা বিহীন মা একরাতের মধ্যেই সেজে ওঠেন সম্পূর্ণভাবে। আর ষষ্ঠীর কাকভোর সকালে সেই অপরূপ শোভা দেখতে ভিড় জমে যায়।

নিষ্ঠাভরে পুজোর চারদিন পরে বিসর্জন! সকলের বিষন্ন মন কাটিয়ে উঠতে বিজয়ায় প্রতিবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় পাড়ার আট থেকে আশি সকলের প্রতিভা উপস্থাপিত করে। তবে এই বারোয়ারিতে লক্ষী সরস্বতী কালী রাস এমনকি বিপত্তারিণী পুজো পর্যন্ত হয় এলাকার মহিলাদের সুবিধার্থে।

ছবি:ফাইল চিত্র

Leave a Reply