ভুত তাড়াতে গিয়ে মা ও মেয়ে গ্রেপ্তার ! অপেক্ষার প্রহর গুনছেন নদীয়ার মনসুর 

Social

অঞ্জন শুকুল, নদীয়া : নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বানপুর মাটিয়ারী গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলপাড়া গ্রাম। গ্রামটি তাঁরকাটার ওপারে ভারত ভূখণ্ডে অবস্থিত। এই গ্রামে বাস করেন মনসুর আলী মন্ডল। পেশায় দিন মজুর। তার চার মেয়ে স্ত্রী নিয়ে সংসার। ইতি মধ্যেই তিন মেয়ের বিবাহ দিয়ে দিয়েছেন। পরিবারে এখন মনসুরেত স্ত্রী গোলেবিবি মন্ডল ও ছোট মেয়ে শোভা খাতুন কে নিয়ে বাস।

শোভা বানপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী।মনসুর বাবু জানান আজ থেকে প্রায় ১১ মাস আগে সন্ধ্যা বেলায় আমার মেয়ে অসুস্থতা বোধ করে। সকলে দেখে ওঝার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন । সাধারণত আমাদের কুলোপাড়ার কেও অসুস্থ হলে গেটে গিয়ে বি এস এফকে জানালে তারা কোম্পানি কমান্ডারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গেট খুলে অসুস্থ ব্যাক্তি কে হাসপাতালে নিজেদের গাড়ি করে নিয়ে যান চিকিৎসাও করান । কিন্তু আমার মেয়ের ঐ ধরনের লক্ষ্ন না থাকার ফলে অনেকেই অনুমান করে ওঝা বাড়িতে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন । মেয়ের মধ্যে অস্বাভিকতার লক্ষন দেখে সকলের সন্দেহ হয় মেয়ে কে ভুতে ধরতে পারে। পাড়া প্রতিবেশীরা জানাই ওকে ওঝা বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য। আমার স্ত্রী দেরি না করে মেয়ে শোভা কে নিয়ে পাশের গ্রাম গয়েসপুর সংলগ্ন বেনিপুর গ্রামে ওঝা বাড়িতে নিয়ে যায়।

যেমন কাজ তেমনি ফল। মা ও মেয়ে যখন যাচ্ছেন তখন তাদের খেয়াল ছিল না পাশাপাশি দুটি গ্রাম হলেও বর্তমানে দুটি দেশের। স্বাভাবিক ভাবেই প্রহরারত বাংলাদেশের বি জি বি এর নজরে আসে। বাংলাদেশে প্রবেশের বৈধ কোনো কাগজ না থাকার কারণে তাদের গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশ জেলে বন্দি। অভাবের সংসারে মনসুর বাবু বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে স্ত্রী ও মেয়ের সাথে যোগাযোগ করবেন। তাই তিনি ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সাধ্যমত যোগাযোগ করেছেন।

আর অবাক হয়ে চেয়ে থাকেন ওই গ্রামের দিকে । কাওকে আস্তে দেখলেই ভাবেন স্ত্রী ও মেয়ে ফিরে আসছেন। কিন্তু স্ত্রী ও মেয়ে ফেরেননি আজও । স্ত্রী ও মেয়ের অপেক্ষায় থেকে থেকে ক্লান্ত আর তাদের ছবি দেখেন আর কান্নাই চোখের জলে বুক ভাসায়  ।ভারত সরকারের কাছে তার কাতর আবেদন জানান স্ত্রী ও মেয়ে কে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

Leave a Reply