মলয় দে নদীয়া :- করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতবর্ষের বুকে, যা বোঝা যাচ্ছে অপ্রস্তুত ভারতবর্ষ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা। তারসাথে উপরি পাওনা হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের মানুষের জমায়েত ও সমাবেশ। মানুষের মধ্যে সচেতনার অভাব তো আগে থেকেই ছিল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কাড়তে শুরু করলো নাগরিকের প্রাণ, শুরু হয়ে গেলো মৃত্যুমিছিল।
বিগত ২৪শে এপ্রিল নদীয়ার কৃষ্ণনগরের দুটি বাড়িতে “স্রেফ” অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হলো দুজন প্রবীণ মানুষের। ঘটনায় সবাই ব্যথিত হলেও এই ঘটনা নাড়িয়ে দিলো শহরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কৃষ্ণনগর ইউনিটের। “ওয়েবস্টার সার্ভিসেস সোস্যাইটি” উদ্যোগ নিলো “মোবাইল অক্সিজেন ভ্যান” পরিষেবা চালু করার। সংস্থার সদস্য আকাশ দীপ ঘোষের কথায় “আমাদের কৃষ্ণনগর শহর তথা পশ্চিমবঙ্গের সম্ভবত প্রথম মোবাইল অক্সিজেন ভ্যান শুরু করেছিলাম এবং তা গত ২৫ শে এপ্রিল থেকে। মোবাইল অক্সিজেন ভ্যান পরিষেবার পাশাপাশি আমরা কোভিড আক্রান্ত রোগীদের পাশে দাঁড়াতে আরও অনেকগুলি পরিষেবা চালু করেছি, টেলিমেডিসিন সার্ভিস, দাতব্য ফিভার ক্লিনিক, বাড়ি বাড়ি ঔষুধ পৌঁছে দেওয়া উল্লেখযোগ্য। আর রোগীর প্রয়োজনে রক্ত দেওয়া তো রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছেই একই সাথে।”
এই সংস্থার তিনজন বিশিষ্ট ডাক্তারবাবুর নিরলস প্রচেষ্টায় প্রতিদিন একশো এর উপর ফোন কল নিচ্ছেন রোগীর পরিবার এর থেকে, পরামর্শ দিচ্ছেন ওষুধের ও হাসপাতালে ভর্তির জন্য। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই সমস্ত পরিষেবা দিয়ে নাগরিকের পাশে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর ওয়েবস্টার সার্ভিস সোস্যাইটির তরুণ তুর্কি থেকে পোড় খাওয়া সদস্যরা।
সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অনুপ বিশ্বাস বলেন, “মানুষের জন্যে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ করে ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা কাজ করছেন, কারোর ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হল না আজও। দু’একজন ফেসবুকে পোস্ট করা বা নিউজে বলা ছাড়া কার্যকর কোনো পদক্ষেপের ফলাফল পৌঁছয়নি আজও আমাদের সদস্যদের কাছে। জানি না কি ভাবে, কত দিন আমরা চলতে পারবো। তার উপর বেশ কিছু মানুষ আর্থিক ভাবে সাহায্য করলেও এই অতিমারিকালে মানুষের পাশে এভাবে রাতদিন চব্বিশ ঘণ্টা দাঁড়াতে গিয়ে তা কোনো ভাবেই যথেষ্ঠ নয়।”