মলয় দে, নদীয়া:- নদীয়ার শান্তিপুরের কদবেল তলার প্রত্যুষ সাহা ছোটবেলা থেকে পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত! বাবা পীযূষ কান্তি সাহা ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরিতে কর্মরত। কাকা সুব্রত সাহা’র ওই একই বাড়িতে একটি আকার স্কুল আছে, সেখানেই প্রত্যুষ ছোটবেলায় শেখে ছবি আঁকা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার চাপ অবশেষে রাজ্যের বাইরে বেসরকারি সংস্থায় পেশার চাপ ! নিজেকে নিয়ে খুব একটা ভাবার সময় পায়নি সে!
লকডাউন ঘোষণার কারণে অনেকের মতোই সেও ফিরে এসেছিলো শান্তিপুরের নিজের বাড়িতে । তারপর থেকে গৃহবন্দী থেকে মা-বাবা,ভাই সহ একান্নবর্তী পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ছোটবেলার মতো আন্তরিকতা ভালোবাসার সম্পর্কের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে সে সিদ্ধান্ত নেয় আর বাইরে নয়! পরিবারের মধ্যে থেকেই এরাজ্যেই কিছু একটা করতে হবে। তাই শিক্ষকতা করার ইচ্ছা থাকে সে ভর্তি হয়েছে ডি. এল. এড -এ। মায়ের গ্যাস ধরানো, ঠাকুরের ধুপ প্রদীপ জ্বালানোর দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে খেলার ছলে নানান ওয়ালম্যাট, শোপিস তৈরি করতো দীর্ঘ লকডাউনের অবসরে। বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন প্রত্যেকের অনুপ্রেরণায় ক্রমশ আজ তা রূপান্তরিত হয়েছে, দুর্গা প্রতিমায়। মাত্র ২৫টা দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে বানানো এই প্রতিমা পুজো হয়তো হবেনা! কিন্তু মাত্র ১০ইঞ্চি এই প্রতিমায় মা দুর্গার মুখ , দশ হাত, ত্রিশূল, অসুর, সবকিছুতে ই অসাধারন শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছে প্রত্যুষ।
বিভিন্ন মৃতপ্রতিমা শিল্পীরাও স্বীকার করেন ছোট আকারের প্রতিমা তৈরি করা যথেষ্ট ধৈর্য এবং শিল্পনৈপুণ্যতার প্রয়োজন হয়। মাত্র দুদিন সময়ের মধ্যেই অসাধারণ এই প্রতিমা তৈরি করে জীবিকার সুলুক পাবে কিনা তা জানা নেই প্রত্যুষের তবে সৃষ্টিসুখ-এর আনন্দে এই প্রথম নিজেকে খুঁজে পেয়েছে সে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন মানসিক চাপ কমাতে এটাই তো অব্যর্থ ওষুধ!