মলয় দে, নদীয়া:-মানুষের সভ্যতার তাণ্ডবে , উন্নয়নের কারণে ওদের বাসস্থান খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাভাবিক চলাফেরার অধিকার খর্ব করে ছিলাম আমরা।
দীর্ঘ লাভ ডাউনে মানুষ হয়েছে গৃহবন্দী, উন্মুক্ত হয়েছে প্রকৃতির অন্য সব সন্তানেরা। ঘন বর্ষায় প্রতিবছরই সাপের উপদ্রব বাড়ে এসময়, কিন্তু “কালাচ” ভীতির কারণটা বড়ই অদ্ভুত।
মানুষের গায়ের ঘামের গন্ধ এদের খুব প্রিয়। তাই রাতে আপনার ঘুমের মধ্যে আপনারই পাশে সোজা উঠে আসতে পারে কালাচ। বিছানা বা ঘরের মধ্যে যেকোনো পরিষ্কার জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। সবচেয়ে আশ্চর্য রাত ছাড়া দিনের বেলায় এদের দেখা মেলে না। দংশনে সময়ও রাত্রিতেই। একটি মশার কামড়ের অর্ধেকও জ্বালা অনুভূত হয় না, ফলে আপনি খেয়াল করতে পারবেন না কখন কামড়েছে। যার ফলে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন না! কামড়ানোর দেড় ঘন্টার মধ্যে ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অসাড় হয়ে আসবে, হাতে পায়ের গাটে ব্যথা, পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, মুখ দিয়ে লালা নিঃসরণ, মলত্যাগের বেগ সহ বমি বমি ভাব , শিবনেত্র অর্থাৎ দুচোখ অসাড় হয়ে দ্বৈত দৃষ্টির সৃষ্টি হয়। সময় মতন এ ভি এস দিতে না পারলে মৃত্যু অনিবার্য।
ঘরচিতির সাথে অনেকটা মিল থাকায় অনেকেই ভাবেন এটিও বিষহীন সাপ। কিন্তু অন্য আর ৫টি বিষধর সাপের মতো হলেও কামড়েছে কিনা এটাই বুঝতে পারেন না অনেকে! আর যখন বুঝে তখন সবটাই শেষ! ঘুমের মধ্যে এই সাপ দংশন করলে, কোন অনুভূতিই হয় না, তবে সে নিদ্রা আর ভাঙ্গে না! চিরতরে জন্য ঘুমের দেশে চলে যায়।
স্থান ভেদে কালা চিতি , ডোমনা চিতি, ডোমনা বোড়া, শিয়র চাঁদা বা শঙ্খচিতি নামে পরিচিত এরা।
নদিয়ায় সাপের উপদ্রব খুব একটা দেখা না গেলেও, এবছর রানাঘাট চাকদহ, হরিণঘাটা শান্তিপুর, চাপড়া সহ বেশ কিছু জায়গায় মাঝেমাঝেই বনদপ্তর উদ্ধার করছে এইসাপ।
ঘরের মধ্যে বিভিন্ন কোনায় কার্বলিক অ্যাসিড, ব্লিচিং দিয়ে রাখা এবং রাত্রে অবশ্যই ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এসময়।
কোনো কিছুতে কামড়েছে মনে হলেই নিকটবর্তী হাসপাতাল চলে যেতে হবে ।