মালদা ৮ এপ্রিল: মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়গড়ি ও বাইসা বাগান গ্রামে বেশ কিছুদিন থেকে অভুক্ত হয়ে কচু পাতা সেদ্ধ খেয়ে থাকা বেদে মুশহর বিন প্রভৃতি যাযাবর সম্প্রদায়ের ৩৭ টি পরিবারের ১০০ জন মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার প্রাথমিক শিক্ষক বুলবুল খান।
উল্লেখ্য গত ৬ তারিখে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়গড়ি ও বাইসা বাগান গ্রামে লকডাউন এর কয়েকদিন পর থেকেই খাদ্য সংকটের মধ্যে পরে প্রায় অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিল ওই এলাকার বেদে বিন মুসহর সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
খবরে প্রকাশ পায় ওই সম্প্রদায়ের মানুষেরা খাবার না পেয়ে কচু পাতা সেদ্ধ খেয়ে দিন গুজরান করছিলেন। লকডাউন এর প্রথম দিকে প্রশাসন থেকে যা খাদ্য সামগ্রী পাওয়া গেছিল তা দুই-একদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকেই পেট ভরানোর ভরসা ছিল কচু পাতা সেদ্ধ। উত্তরবঙ্গ সংবাদ এ খবরটি প্রকাশ পাওয়ার পরই আজ হরিশ্চন্দ্রপুর দক্ষিণ চক্রের দক্ষিণ মুকুন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বুলবুল খান এই সমস্ত নিরন্ন অসহায় মানুষদের হাতে আজ চাল ডাল আলু সহ বেশ কিছু খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন।
এ প্রসঙ্গে বুলবুল বাবু জানালেন আমি উত্তরবঙ্গ সংবাদের মাধ্যমে এই খবরটি জানতে পেরেই এই সম্প্রদায়ের লোকেদের কিছুটা সাহায্য করার জন্য উদ্যোগী হয়ে ছিলাম। আমি আমার সামর্থ্য মত আজ এখানে বসবাসকারী যাযাবর সম্প্রদায়ের সমস্ত পরিবারের হাতে ৫ কেজি করে চাল আলু প্রভৃতি তুলে দিলাম। প্রয়োজনে আমি আগামীতে আরো খাদ্য সামগ্রী ব্যবস্থা করব।
হাটে হাটে মাদারি খেলা মধু সংগ্রহ কবিরাজি ওষুধ বিক্রি এসব এদের পেশা। লক ডাউন এর জন্য এ সমস্ত বন্ধ হয়ে যাওয়াতে খাদ্য সংকটে পড়ে গেছিল প্রায় শ’খানেক ওই সম্প্রদায়ের লোকেরা। লকডাউন এর শুরুতে কিছুটা সরকারি ত্রাণ মিললেও তা কয়েক দিনে শেষ হয়ে যায়। এরপরই খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরেকচু পাতা সেদ্ধ খেয়ে দিনযাপন করতে থাকে ওই সম্প্রদায়ের শিশু-থেকে বৃদ্ধরা।
ওই সম্প্রদায়ের জগদীশ বেদ জানিয়েছেন বেশ কয়েকদিন থেকে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে আমরা বাড়িতে আটক হয়ে পড়ে আছি। রোজগার বন্ধ।প্রথমদিকে সরকারি ত্রাণ পাওয়া গিয়েছিল কিছু। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সেটা শেষ হয়ে যায়। রেশন থেকে আমরা পর্যাপ্ত সামগ্রী পাচ্ছিনা। তাই বেশ কিছুদিন থেকেই খাবার না মেলাতেই বাধ্য হয়ে কচু পাতা সেদ্ধ খেতে শুরু করেছিলাম পেট ভরানোর তাগিদে। এলাকার এক শিক্ষক বুলবুল খান আমাদের বেশ কিছু খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছেন ওনাকেও আমরা ধন্যবাদ জানাই।