নিউজ সোশ্যাল বার্তা : গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক বিরোধী শক্তিরা যখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে ঠিক তখনই সম্প্রীতি ও মানবতার এখন দৃশ্য দেখতে দেখা গেল পঞ্চনন্দপুর এর লোয়াটোলা গ্রামে।
গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবারের এক বৃদ্ধর মৃত্যুর পর তার সৎকারের ব্যবস্থা করল মুসলিমরা যুবকরা। । বুধবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে মালদা জেলার পঞ্চনন্দপুরের লোয়াইটোলা গ্রামে । মৃত ব্যক্তির নাম বিনয় সাহা (৯০)।
পঞ্চনন্দপুর এর লোয়াইটোলা গ্রামে শতাধিক মানুষের বাস। এরমধ্যে একটিমাত্র হিন্দু পরিবার।গত ২০ বছর থেকেই এই গ্রামে বাস করেন বিনয় সাহা ও তার দুই ছেলে কোমল ও শ্যামল সাহা । মঙ্গলবার রাতে হঠাৎই বিনয় সাহার মৃত্যু হয়। চরম সংকটে পড়ে তার দুই ছেলে কমল ও শ্যামল। এই রাতে লকডাউন ভেঙে কোন আত্মীয়-স্বজনের আশা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয় তার দুই পুত্রর।
ঘটনা জানতে পেরে ই এগিয়ে আসে গ্রামবাসীদের একাংশ । পঞ্চনন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আস্কারা বিবি ও তার স্বামী মুকুল শেখ সহ ছুটে আসেন গ্রামের ১৫—১৬ জন মুসলিম যুবক। তারাই বাঁশের ঝাড় থেকে বাস এনে শববাহী চাচরি তৈরি করেন। পাড়ার মুসলিম যুবকরাই নিজেদের কাঁধে তুলে নেন বিনয় সাহার মৃতদেহ।
পায়ে হেঁটে ওই রাতেই গ্রামবাসীরা নিয়ে যায় শোকূল্লাপুরের শ্মশানে এবং শবদেহ দাহ করার ব্যবস্থা করে গ্রামবাসীরা। দুই ভাই কোমল ও শ্যামল সাহার বক্তব্য আমরা দীর্ঘদিন থেকে থেকে এই গ্রামে বাস করে আসছি। আমাদের আপদে-বিপদে গ্রামের সবাই ঝাপিয়ে পড়তো। হিন্দু বলে কেউ কোনদিন আমাদের পরিবারের কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার পর্যন্ত কেউ করেনি । আজ বাবার মৃত্যুর পরে এই লক ডাউন এর মধ্যে কিভাবে সৎকার করব সে সেটি নিয়ে আমরা চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু গোটা গ্রামবাসী যেভাবে ঝাপিয়ে পড়ে আমার বাবাকে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করল তা কোনদিন ভোলা যাবে না। ”
পঞ্চনন্দপুর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিজিয়া বিবি বলেছেন “আমাদের গ্রামে আমরা সবাই হিন্দু মুসলমান একসাথে একে অপরের সুখে-দুখে এক ভাবে বেঁচে থাকি। গোটা দেশে যখন ধর্মে ধর্মে বিভেদ তখন আমরা আমাদের গ্রামের একমাত্র পরিবারকে কোনদিন বুঝতে দিইনি যে সেখানেও একা। “