প্রীতম ভট্টাচার্য : প্রথমে জনতা কার্ফু, তারপর কিছু অংশ লকডাউন পরে পুরো দেশ লকডাউন। বিশ্বে করোনার থাবা, পরিবেশ শান্ত, মানুষ খাঁচা বন্দী।সরকারের নির্দেশিকা কোনোরকম বাইরে বেরোনো চলবে না। আপনি বাঁচলে দেশ বাঁচবে। ২১টা দিন চারদেওয়ালে বন্দী থাকুন। দোকান, বাজার, বিনোদন, রেষ্টুরেন্ট, চা এর দোকান সব বন্ধ থাকবে।
গোটা পৃথিবী বিষের কড়াল গ্রাসে। কিন্তু ওদের কি হবে? ওদের ভরসা যে আমি আপনি। চা এর দোকান খোলা থাকলে দু একটা বিস্কুট মেলে। হোটেল, বাজার খোলা থাকলে ঠিক খাবার জুটে যায়। এবার কি হবে? মানুষতো গৃহবন্দী ওদের পেট চলবে কি করে? ওরা না বাঁচলে শহর বাঁচবে কি করে? শহরকে পাহারা দেবে কে? পরিবেশের ভারসাম্য থাকবে তো?
এ এক বড় কঠিন সময়। রাস্তার লালু, ভুলুরা বুঝে উঠতে পারছে না কি হলো? সকালের মাংসের দোকান, দুপুরের হোটেল, চা এর দোকান সব বন্ধ। পাড়ার সুবোধ কাকু বললেন আমার অনেকগুলি এরকম রাস্তার পোষ্য আছে। তাদের প্রতিদিন খেতে দিতাম,এবার দায়িত্ব আরও বাড়লো। ওদের জন্য দুবেলা খাবার রান্না করছি ও নিজে হাতে খাওয়াচ্ছি। আমি খাবার নিয়ে না গেলে ওরা খেতে পাবেনা। সেক্টর ফাইভে চাকরি করা ঝুম্পা বললো অফিস ছুটি হওয়ার পর রাস্তার ওপারে কানাইদার চা এর দোকানে অনেকগুলি আমার পোষ্য আছে তাদের প্রতিদিন খেতে দিই। এখন অফিস নেই, তাই প্রতিদিন ওদের জন্য কিছু খাবার দিয়ে আসছি।
সত্যি কি অবস্থা, আমরা বাড়িতে থেকে ডাল ভাত খাবো আর ওরা। তাই এই দুর্দিনে আপনিও আপনার সামর্থ্যমতো কিছু খাবার দিন। আপনার বাড়ির পোষ্যটি খাবে আর ওরা অভুক্ত থাকবে। যে যেটুকু পারবেন ওদের দিকে এগিয়ে দিন, ওরা বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে। রাতের অন্ধকারে ওরাই আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। আজ ওরা বিপন্ন, ওদের পেট আজ বিষন্নতায় জজ্জরিত।ওরা আর কেউ নয় আমাদের বিনাপয়সার অতন্দ্রপ্রহরী, লালু, ভুলু।
ছবি: সংগৃহীত