বীর বিপ্লবী শহীদ বসন্ত কুমার বিশ্বাসের জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Social

রাজু পাত্র, নদীয়া : বসন্ত বিশ্বাস (জন্মঃ-৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৫ – মৃত্যু- ঃ১১ মে ১৯১৫)।

জন্ম নদীয়া জেলার ভীমপুর থানার পোড়াগাছা গ্রামে। কৃষ্ণনগরের কাছেই পোড়াগাছা। তাঁর পিতার নাম মতিলাল বিশ্বাস। নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দানকারী প্রধান নেতা দিগম্বর বিশ্বাস তাঁর পূর্বপুরুষ । তাঁরই ভ্রাতুষ্পুত্র বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংশোধন প্রশাসন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।

রাসবিহারী বসুর অনুগামী ছিলেন বসন্ত বিশ্বাস। সশস্ত্র আন্দোলনেই ছিল তাঁদের বিশ্বাস।
তিনি যুগান্তর গ্রুপের নেতা অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও রাসবিহারী বসুর নিকট সশস্ত্র কর্মকান্ডের দীক্ষা নেন। ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে দিল্লির উন্মুক্ত রাস্তায় লর্ড হার্ডিঞ্জ এর ওপর বোমা নিক্ষেপ করে বসন্ত কুমার বিশ্বাস ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ১৯১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী তিনি যখন তাঁর পিতার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান পালন করছিলেন, তখন তাঁকে নদীয়ার কৃষ্ণনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। ১৯১৪ সালের ২৩ মে দিল্লিতে দিল্লি-লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি শুরু হয় এবং ৫ অক্টোবর বসন্ত কুমার কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। সরকার তাঁকে মৃত্যুদন্ড দিতেই বেশি আগ্রহী ছিল। ।

অবশেষে বসন্তকুমার বিশ্বাসকে ফাঁসি দ্বারা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়।১৯১৫ সালের ১১ মে বসন্তকুমার বিশ্বাস অত্যন্ত শান্ত ও অবিচলিত মনে ফাঁসির মঞ্চে উঠেন। পাঞ্জাবের আম্বালা জেলে মাত্র বিশ বছর বয়সে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়ে বসন্তকুমার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আত্মত্যাগী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেন।

দেশের জন্য তাঁর এই ত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তিনটি ফলক স্থাপন করা হয়েছে। একটি নদীয়ার মুড়াগাছা স্কুলের সামনে; যা উদ্বোধন করেন বিপ্লবী ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। দ্বিতীয়টি কৃষ্ণনগরে রবীন্দ্র ভবনের পাশে এবং তৃতীয়টি টোকিও-র মাদাম তেতসু-কোং-হিওচি-এর বাগানে। শেষোক্ত ফলকটি রাসবিহারী বসু তাঁর তরুণ অনুসারীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মাণ করিয়েছিলেন। আজ জন্ম দিবসে এই শহীদ বিপ্লবীকে স্মরণ করি গভীর শ্রদ্ধায়।

Leave a Reply