মলয় দে, নদীয়া :-নদিয়ার শান্তিপুরে ‘জলেশ্বর শিব মন্দির’ বাংলার অন্যতম প্রাচীন শৈবতীর্থ। এখানে রয়েছে কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ। মাটিয়ারির রুদ্ধেশ্বর ও রাঘবেশ্বর মন্দিরের সঙ্গেও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। তবে, উচ্চতায় কিছুটা কম।
প্রায় ৩৫০ বছর আগেও প্রচন্ড ক্ষরায় এলাকার ভক্তবৃন্দের মনস্কামনা পূর্ণ করে অঝোর ধারায় ঝরেছিল বৃষ্টি। সেই থেকেই জলেশ্বর। মহা শিবরাত্রি তিথিতে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যায় নদীয়ার সবথেকে প্রাচীন জলেশ্বর মন্দিরে জানা যায় । নদীয়ার শান্তিপুরের জলেশ্বর তেলিপাড়ার শিব মন্দির নদীয়া রাজ রুদ্র রায়ের কনিষ্ঠপুত্র রাম কৃষ্ণের জননী প্রায় আঠারো শতকের মাঝামাঝি এটি প্রতিষ্ঠিত করেন বলে প্রচারিত এই মন্দিরের শিবলিঙ্গটি কালো পাথরের উচ্চতা প্রায় তিন ফুট চড়ক নীল উৎসব শিবরাত্রি ইত্যাদি তিথি গুলিতে প্রচুর ভক্তদের সমাগম হয় এই জলেশ্বর মন্দিরে।
মন্দিরটির গায়ে বহু পুরনো পোড়ামাটির মূর্তি ও অন্যান্য অলংকার সজ্জিত প্রাচীন এই মূর্তি বিষয়বস্তু পৌরাণিক যথা কৃষ্ণ লীলা, ভীস্মের শরশয্যা ,মারিচ গরুর বাহন, তীরন্দাজ বধ্য, হরগৌরী যুদ্ধ বন্দুক নিয়ে সেপাই ইত্যাদি।
কথিত আছে, একবার কৃষিপ্রধান নদিয়ায় বৃ্ষ্টির চরম আকাল দেখা দেয়। সেই সময় প্রখ্যাত সাধক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী এই শিবমন্দিরে ছুটে আসেন। তিনি বৃষ্টিপাতের কামনায় এই মন্দিরে শিবের মাথায় প্রচুর গঙ্গাজল ঢালেন। তারপরই এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এই কারণে, এই শিবমন্দিরের নাম বদলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা একে জলেশ্বর শিবমন্দির নাম ঢাকতে শুরু করেন। আজও এই নামেই পরিচিত শান্তিপুরের শিবমন্দিরটি।
মিউনিসিপ্যাল কমিশনার এবং অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট কালীচরণ চট্টোপাধ্যায়ের পূর্বপুরুষরা এই মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। কালীচরণ চট্টোপাধ্যায় নিজে একবার এই মন্দিরের সংস্কার করান। তাঁর মেয়ে মোহিতকুমারীর সময়কালে এই মন্দিরের সংলগ্ন নাটমন্দির তৈরি হয়।দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভক্ত আসেন এই মন্দিরে। কথিত আছে, ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন জলেশ্বর শিব।
আজ শ্রাবণের প্রথম সোমবার উপলক্ষে সকাল থেকেই ভক্তবৃন্দদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতন, সেবাইত জানান সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে জল ঢালা। চতুর্থ সোমবার মন্দির প্রাঙ্গণে তিল ধারনের জায়গা থাকে না।