পরিবেশ বাঁচাতে সাইকেলে করেই বিশ্ব ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে পুরুলিয়ার অক্ষয়

Social

মলয় দে নদীয়া:- অভাবের সংসার! বাবা একটি হোটেলের সামান্য কর্মচারী। দুই দিদি এবং বোনের একমাত্র ভাই অক্ষয় ভগৎ। দুই দিদির বিয়ে হওয়ার পর একমাত্র বোনকে পড়াশোনা শেখানোর মাঝে মাধ্যমিকের পর আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি। ছোটবেলা থেকেই অক্ষয়ের আদর্শ স্বামী বিবেকানন্দ। দুচোখ ভোরের স্বপ্ন ছিল স্বামী বিবেকানন্দের মতন পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করবে সারা পৃথিবী। সেই সময় আর এই সময়ের মধ্যে অনেকটা কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হয়ে সহযোগিতা হিসেবে বেছে নেয় সাইকেল কে। কারণ ওই সাইকেলে চড়েই সে ডিম দুধ খবরের কাগজ বাদাম বিক্রি করেছে দীর্ঘদিন এমনকি টিউশনি পড়াতে যাওয়ার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতো সে। কখনো জল অপচয় বন্ধ করা, কখনো বৃক্ষরোপণ কখনোবা বাল্যবিবাহ বন্ধ করা পরিবেশের নানান রকম বার্তা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বেপাত্তা হতো রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। বাল্যবিবাহ বন্ধ করা প্রসঙ্গে অবশ্য তার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, নিজের পরিবারেই দুই দিদিকে সাংসারিক অভাব অনটনের জন্য পড়াশোনা বন্ধ করে বিয়ে দিতে বাধ্য হন তাঁর পিতা।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এক বছর দু মাস ধরে তিনি সাইকেলেই প্রথম বিহার, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, চার রাজ্য পেরিয়ে পৌঁছেছিলেন ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরে, যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জেলা প্রশাসন তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এবারে গত ২২শে ফেব্রুয়ারীতে ২০২২ এ দুঃসাহসিক অভিযানের কর্মসূচি নিয়েছে সে। আগামী পাঁচ বছর সাইকেল চালিয়েই কাটাবেন তিনি। আফ্রিকা ইউরোপ আমেরিকা এশিয়া ইউরোপ ঘুরে বার্তা দিতে চান পরিবেশের সুরক্ষা এবং মোবাইল আসক্তি বিশেষত গেমিং থেকে বর্তমান প্রজন্মকে দূরে থাকার।

গতকাল কলকাতা থেকে তিনি পৌঁছেছিলেন নদীয়ার কৃষ্ণনগরে সেখানে প্রচেষ্টা নামক এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করার মধ্য দিয়ে রাতে আহার এবং থাকার ব্যবস্থা করে। আজ ভোরে সে রওনা দেয় মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন জেলা ভিত্তিক খবরের মাধ্যমেই তার গতিবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং প্রশাসন শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষ তাকে উৎসাহ প্রদান করতে এগিয়ে আসছেন ছোট ছোট সেমিনার পথসভা লিফলেট বিলি থাকছে প্রতিদিন নিয়মিত। তিনি জানান ইতিমধ্যেই তিনি আফ্রিকার কেনিয়ার ভিসা নিয়েছেন, তাদের সহযোগিতাতেই বিভিন্ন মহাদেশের ভিসার ব্যবস্থা তারাই করছেন। তবে জলপথ পার হতে জলযানের উপর ভরসা করতেই হবে তাকে। কিন্তু ফিরে আসার সময় বা কোনো পরিস্থিতিতেই সাইকেল তিনি ছাড়বেন না বলেই জানিয়েছেন।

Leave a Reply