সোশ্যাল বার্তা : অশোকনগর কল্যাণগড় শিশু উৎসব কমিটির পরিচালনায় তনয় মজুমদারের ” এক গুচ্ছ নাটক” গ্রন্থ প্রকাশ, চিত্রশিল্পী বিক্রম দাসের কারুশিল্প প্রদর্শনী ও শারদীয়া বুক স্টলের উদ্বোধন হয় ১০ই অক্টোবর অশোকনগর কচুয়া মোড়ে শিশু উৎসব কমিটির অফিস প্রাঙ্গণে । অনুষ্ঠান শুরু হয় শিশু শিল্পী বৃষ্টি মজুমদারের সঙ্গীত ও অরিত্র দাসের আবৃত্তির মধ্য দিয়ে ।
তনয় মজুমদারের ” এক গুচ্ছ নাটক ” গ্রন্থটি প্রকাশ করলেন শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত , অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ ঘোষ । গ্রন্থটি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন কি করে একটি শিশুর মানসিক বৃদ্ধি ঘটবে, কি করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই উদ্দেশ্যে অশোকনগর কল্যাণগড় শিশু উৎসব কমিটি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে কাজ করে চলেছে। সুনাগরিক হিসাবে কমিটির প্রত্যেক সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। শ্রী ঘোষ এও বলেন
নাটক সমাজের একটা দর্পণ, এটিকে একটি সুন্দর লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরলেন তনয় মজুমদার তার এই ” এক গুচ্ছ নাটক ” গ্রন্থটির মাধ্যমে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন একটি স্ট্রাকচার তৈরি করা যেমন আর্ট, তেমনি দেখাটাও আর্ট। এরপর চিত্রশিল্পী
বিক্রম দাসের কারুশিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন করতে গিয়ে চিত্রশিল্পী সুবীর সরকার বলেন শিশু উৎসব কমিটি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বার্তা দিলো মোবাইল ছেড়ে আঁকতে, ঠাকুমার ঝুলি পড়তে । এরজন্য শিশু উৎসব কমিটিকে তিনি ধন্যবাদ জানান । শিশুদের সাহিত্যে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে শিশু উৎসব কমিটির পরিচালনায় শারদীয়া বুক স্টলের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ঠ চিকিৎসক ডাক্তার সুজন সেন ।তিনি বই পড়ার উপকারিতা উল্লেখ্য করতে গিয়ে বলেন বই পড়লে মস্তিষ্কের ব্যায়াম হয় ও কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পায়। অ্যালজাইমার এর মত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এই বই পড়ার মাধ্যমে। তিনি বলেন সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এই বই পড়বার প্রচার অনেকটা কমে গেছে কিন্তু তার পিছনে কর্পোরেট সংস্থার ব্যবসার উদ্দেশ্য আছে । করোনা আবহে তার কাজের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন গতবছর থেকে আজ অব্দি এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি তার চেম্বার একদিনের জন্য বন্ধ করেননি । করোনা রুগী থেকে শুরু করে অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও তিনি এখনো নিয়মিত করে যাচ্ছেন ।
“এক গুচ্ছ নাটক ” গ্রন্থের লেখক নাট্যকার তনয় মজুমদার বলেন আমার নাটকের কিছু পুরোনো স্ক্রিপ্ট ছিলো আর কিছু নতুন স্ক্রিপ্ট দিয়ে এই গ্রন্থটি রচনা করি । এই গ্রন্থটি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে শিশু উৎসব কমিটির অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং এরজন্য কমিটির সমস্ত সদস্যদের তিনি ধন্যবাদ জানান । নাট্যকার তনয় এও বলেন তার এই কাজে উৎসাহিত করার জন্য তিনি মনীষী নন্দীর কাছে চির কৃতজ্ঞ । তিনি এই গ্রন্থটি পড়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন ।চিত্রশিল্পী বিক্রম দাস বলেন আমার শিল্পের কাজ দিয়ে যে প্রদর্শনী হবে এটা আমি কখনো ভাবিনি । আজকে আমার শিল্প কাজের যে কারুশিল্পের প্রদর্শনী হয়েছে এরজন্য শিশু উৎসব কমিটিকে তিনি ধন্যবাদ জানান । তিনি বলেন শিল্প থাকলে শিল্পী বাঁচবে আর বই থাকলে লেখক বাঁচবে । তিনি তার এই শিল্পের কাজের জিনিসগুলো সংগ্রহ করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন ।সেইসঙ্গে তিনি বলেন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডাক্তার সুজন সেন সামনের সারিতে থেকে যেভাবে গত দেড় বছরের ওপর করোনা রুগীর চিকিৎসা করেছেন তা আজকের দিনে ভাবা যায় না ।তিনি বলেন শিশু উৎসব কমিটির পরিচালনায় ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ডাক্তার সুজন সেন গত একবছর ধরে প্রতি বৃহস্পতিবার বিনা সাম্মানিক রুগী দেখছেন । ডাক্তারবাবুর চিকিৎসার উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা বিক্রম দাস বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন ।
শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত মনোজ ঘোষ , করোনা আবহে প্রতিদিন করোনা রুগী থেকে শুরু করে সাধারণ রুগীর
চিকিৎসায় ব্রত ডাক্তার সুজন সেন ও চিত্রশিল্পী সুবীর সরকারের হাতে শিশু উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে স্মারক তুলে দিয়ে সম্মানিত করেন যথাক্রমে শিশু উৎসব কমিটির সভাপতি মনীষী নন্দী, শিশু উৎসবের উপদেষ্টা মন্ডলীর আহ্বায়ক হরিদাস কর ও কার্যকরী সভাপতি সমীর রঞ্জন দত্ত । অনুষ্ঠানে
“এক গুচ্ছ নাটক” গ্রন্থ , কারুশিল্প এর জিনিস ও বুক স্টলের প্রথম ক্রেতা ছিলো যথাক্রমে শিশু শিল্পী দেবস্মিতা কর, অরিত্র দাস ও অশেষ মুখার্জি । সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে সঞ্চালনা করেন শিক্ষিকা ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি । উদ্যোক্তারা জানান
প্রদর্শনী ও বুক স্টল খোলা থাকবে আগামী ১৫ অক্টোবর অব্দি প্রতিদিন বিকাল ৫ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ।