অঞ্জন শুকুল, নদীয়া: নদীয়ার হাঁসখালির গাজনা হরিতলা একটি ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান।যার কলকাতা থেকে দূরত্ব ১০০ কিমি বাংলাদেশ সীমান্ত খুব একটা দুরে নয় । মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটি দুর্গাপুজো এইবছর ৩০০ বছরে পদার্পণ করল।
কথিত আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় বর্গীয় দস্যুদের আক্রমণের হাত থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষা করবার জন্য শিবনিবাসে রাজত্ব স্থাপন করেন। সেই সময় হরিতলার জনৈক অশ্বিনি রক্ষিত রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নায়েব বলে পরিচিত ছিলেন। নায়েবের অনুরোধে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দুর্গাপূজার অনুমতি দেন অশ্বিনি বাবুকে । ইতিহাস থেকে আরো জানা যায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই পূজার সূচনাও করেন অশ্বিনি বাবুর অনুরোধে ।তারপর সব ইতিহাস।,,,,
রাজার এই বাণী প্রতিটা ঘরে মহালয়ার মতো আজও বাজে।১৮৯০ সালে এলাকার মহিলারা নিজের হাতে এই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে পূজার সূচনা করেন। সেই থেকে হরিতলার পূজা মহিলা পরিচালিত পূজা হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি। এলাকায় গেলে দেখা যায় মহিলারা পূজা নিয়ে ব্যস্ত । পাশাপাশি মণ্ডপে রং করছেন নিজ হাতে করে । আরও অবাক হবার বিষয় হল মহিলারা নিজেরা হাতে করে দুর্গা প্রতিমা বানাচ্ছেন এবং নতুন মেয়েদের কেউ সেই কাজ শেখাচ্ছেন যাতে করে পরবর্তীতে তারা এসে এই কর্তব্য পালন করতে পারে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন মহিলা আক্ষেপ করে বলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বিভিন্ন পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তখন এখানে পুজো কমিটি মহিলা পরিচালিত হওয়া সত্বেও সাহায্য পাচ্ছেন । সরকার তাদের দিকে দৃষ্টি দিতেন তাহলে আমাদের মহিলারদের এই পূজা করতে সুবিধা হত ।পূজা আরও জাকজমকপূর্ণ হতো। তাদের এই আবেদন সরকারের কান পর্যন্ত পৌছায় কিনা তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন গোটা হরিতলাবাসী। রাজা নেই ,রাজত্ব নেই , নেই নায়েব, তবুও রাজার স্মৃতি আঁকড়ে আজো রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নামেই উৎসর্গ করা হয় হরিতলার দূর্গা পূজা । তাদের এহেন কাজকে নায়েবের পরিবারের সদস্য রত্না রক্ষিত সাধুবাদ জানিয়েছেন তেমনি এলাকাবাসী মহিলাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন । আমরাও তাদের এই উদ্যোগ কে স্বাগত জানায় ।