মলয় দে, নদীয়া:-ভূত পুজো প্রচলিত ছিল বাংলাদেশে। তিন পুরুষ আগে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল ব্রাহ্মণ কিশোর গ্রামে পুজিত হতো এই ভূত পুজো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সন্ন্যাসীরা ভারতে এসে নতুন করে শুরু করেন এই পুজো। মূলত এই পুজোর সঙ্গে তন্তুবায় সম্প্রদায়ের মানুষ যুক্ত। এই ভূত আসলে কবন্ধ বা নিষ্কন্দা যার উল্লেখ রয়েছে রামায়ণে। প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে এইভাবেই পুজো করা হয় বিশাল আকার মাটির তৈরি মুণ্ডহীন ভুতকে। পূজা উদ্যোক্তা হরিপদ বসাক বলেন এই দানবের বিচিত্র ও ভয়ংকর বর্ণনা বাল্মিকী রামায়ণ ও কৃত্তিবাসী রামায়ণে উল্লেখ রয়েছে , কিন্তু রামায়ণ চরিত্রের সাথে শিবের কোন উল্লেখ্য নেই ভূত বা কবন্ধের, কেন গাজনের সঙ্গে যুক্ত হলো এ প্রশ্নের উত্তর অজানা। ১২ ফুট চওড়া এবং ২ ফুট উঁচু কাঁচা মাটি দিয়ে পাহাড় প্রমাণ বিশাল আকার মূর্তি মাটিতে শায়িত অবস্থায় তৈরি করা হয় পহেলা বৈশাখের সকাল থেকেই । তারপর দৈত্যকার সেই মূর্তিতে মূল্যহীন অবস্থায় থাকে দুই হাত ,রক্তমাখা দাঁত ,রক্তে রাঙা জিহবা , কালো মাটির শরীরে সবকিছুই ভয়ানক। এই পুজো অনুষ্ঠিত হয় নদীয়া জেলার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত ফুলিয়া তালতলা গ্রামে। জানা যায় প্রায় ৫৪ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে এই পুজো।
সন্ন্যাসী দেবব্রত বসাক বলেন , প্রতিমা তৈরি করতে কোন মৃৎশিল্পীর প্রয়োজন হয় না ,আমরা সকল সন্ন্যাসীরা মিলেই কাঁচা মাটি ও রং দিয়ে তৈরি করি। প্রায় আমরা দেরশো জন সন্ন্যাসী রয়েছি গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী গ্রাম মিলে। স্থানীয় বাসিন্দা নিখিল সরকার বলেন আমরা যেমন দুর্গাপূজা কালী পূজা উৎসবে মেতে থাকি, ঠিক একইভাবে এই পুজোকে ঘিরে গ্রাম সহ বিভিন্ন দূর দুরন্ত মানুষ পয়লা বৈশাখের দিন ভূতপুজো তে মেতে থাকেন। প্রতি বছর অপেক্ষা করে থাকেন গ্রামবাসীরা এই পুজোর জন্য ।