দেবু সিংহ,মালদা:-পরিবারের পাঁচ সদস্যই দৃষ্টিশক্তিহীন। পথে ভিক্ষা করেই চলে তাদের জীবন। সেই অন্ধকার জীবনে আলো ফুটালো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের মাধ্যমে। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারে আপাতত ১৫বছরের সুমিত ও ১২বছরের সোমা ফিরে পাচ্ছে চোখের আলো। পরিবারের আরো তিন সদস্যের অস্ত্রোপচারও হবে খুবই শীঘ্রই।চোখের আলো প্রকল্পের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরে পেতেই খুশি এই পরিবার।
বছর দুয়েক আগে গাজোলের ব্যবসায়ী প্রদীপ লাহা এই দৃষ্টিহীন পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ভিক্ষা করতে দেখেন। এরপরই তিনি গাজোল ব্লকের হাতিমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চক্ষু পরীক্ষক অজিত কুমার দাসের সাথে যোগাযোগ করেন।চক্ষু পরীক্ষক অজিত কুমার দাসের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা।অজিতবাবু তাদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তদ্বির করতে থাকেন। এই সময় রাজ্য সরকারের ‘চোখের আলো’প্রকল্পের সূচনা হয়। আর এই দৃষ্টিহীনদের সেই প্রকল্পের আওতায় শুরু হয় চিকিৎসা। প্রতিকুলতা ছিল অনেক। কিন্তু মালদা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় তা দুর হয়। তৈরী হয় চক্ষু সার্জেন সুমন চ্যাটার্জীর নেতৃত্ব মেডিক্যাল টিম।ঠিক হয় দুইটি পর্যায়ে এই পরিবারের পাঁচ সদস্যের অস্ত্রোপচার হবে। প্রথম পর্যায়ে সুমিত ও সোমার অস্ত্রোপচার হয় ২১নভেম্বর।চক্ষু চিকিৎসক সুমন চ্যাটার্জী সহ বিশ্বজিৎ কুমার,হাতিমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চক্ষু পরীক্ষক অজিত কুমার দাস, কর্মী সুভম তেওয়ারীর সহযোগিতায় সফল হয় দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার লড়াই।
মালদা জেলার গাজোলের তুলসীডাঙ্গার বাসিন্দা বিশ্বনাথ সরকার(৫০)। সাত বছর বয়সে ট্রাইফয়েড হওয়ার ফলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি।তাঁর স্ত্রী অর্চনা সরকারও (৩৮) প্রায় দৃষ্টিহীন। তাদের ছেলে মেয়ে অমিত(২০),সুমিত(১৫),সোমা(১২) ও সোনালি(৪)। অমিত ছাড়া বাকী সকলেই দৃষ্টিশক্তিহীন। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের পক্ষে চোখের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি।সরকারি ভাতা ছাড়া পথে ভিক্ষা করেই চলে তাদের সংসার।
নিজের দৃষ্টি ফিরে না পেলেও পরিবারের পাঁচ সদস্যের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভবনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিশ্বনাথবাবু। সুমিত ও সোমা আজ খুশি।