মলয় দে নদীয়া :-সোমবার দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব দীপাবলি। গোটা বাংলা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় পালন করা হবে কালীপুজো। দীপাবলি আলোর উৎসব হলেও এই দিনেই বাংলার ঘরে ঘরে অথবা পাড়ায় পাড়ায় পালন করা হয়ে থাকে শক্তির আরাধনা। নদিয়া জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় মহাসমারোহে পালন করা হয় কালীপুজো। যেমন নদিয়ার ধুবুলিয়া, আড়ংঘাটা, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় কালীপুজো বিখ্যাত। তবে নদিয়ার কালীগঞ্জের অতি প্রাচীন বুড়োমার কালীপুজোর রয়েছে এক ইতিহাস।
বর্তমান পুরোহিতের থেকে জানা যায় প্রায় ৩৫০ বছরের বেশি প্রাচীন এই কালীপুজোর রয়েছে এক পুরাণ কাহিনী।
জানা যায় বাড়ির নতুন বউ নিমন্ত্রিতদের খাবার পরিবেশন করার সময় হঠাৎই ঘোমটা খুলে যায়। নতুন বউয়ের এক হাতে ভাতের পাত্র, অন্য হাতে হাতা। কিন্তু আচমকাই আরও দুটো হাত দিয়ে ঘোমটা টেনে নিল সে। এই ঘটনায় সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন সকলে। এরপরেই লজ্জায় নতুন বউ ছুটে গেলেন বাড়ির বাইরে। এরপর থেকেই আর কেউ খুঁজে পাইনি নতুন বউকে। প্রায় ৩৫০ বছর আগের এই ঘটনা কালীগঞ্জের হরিনাথপুরের আজও লোকমুখে পরিচিত। এই ঘটনার পর থেকেই হরিনাথপুরের ভট্টাচার্য বাড়িতে শুরু হয় কালীপুজো।
সেই পুজো চলে আসছে আজও। পরিবারের এক সদস্য জানান এই পুজো প্রায় ৩৫০ বছর আগে শুরু হয় দেবীকে এখনও বাড়ির বউ রূপে পূজা করা হয়। তবে পুজোর প্রথা কিছুটা হলেও বদল করা হয়েছে বর্তমানে। এই পুজোয় আগে প্রচুর ছাগল বলি হত বেশ কিছু বছর আগে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বলি প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শুধু কালীগঞ্জের বাসিন্দারাই নন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বুড়ো মায়ের পুজো দেখতে আসেন অসংখ্য ভক্তরা। শুধু পুজোয় নয় পূজোর পরের দিন ভাসান যাত্রা দেখতেও ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। সেই কারণেই পুজোর এই কয়েকটা দিন উৎসবে মুখরিত হয়ে থাকে কালীগঞ্জের মানুষ।