সাত বছরের এক পড়ুয়ার কীর্তি ! এক মিনিটে ১৯৫ টি দেশের নাম ! ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম

Social

মলয় দে নদীয়া :-যে বয়সে অন্যান্য খুদেরা স্মার্টফোনে গেম খেলতে ব্যস্ত থাকে। সেখানে আর পাঁচটা শিশুর থেকে অনেকটা আলাদা নদিয়ার শান্তিপুরের প্রকৃতি বৈরাগী। দ্বিতীয় শ্রেণির এই পড়ুয়া ইতিমধ্যেই তার আশ্চর্য গুণ দিয়ে গড়েছে রেকর্ড। গিনেসে নাম তোলার প্রস্তুতি চলছে। কি এমন করল সে! যেখানে আমি আপনি এমনকি ৫০ টা দেশের নাম বলতে পারি ভূগোলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও মেরে কেটে একশো দেশের নাম বলতে পারেন সেখানে প্রকৃতি পতাকা দেখেই ১৯৫টি দেশের নাম বলতে পারে মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই।

বিশ্বের দ্রুততম খুদে হিসেবে পৃথিবীর সমস্ত দেশের নাম অনর্গল বলতে পারায় প্রকৃতি জায়গা করে নিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে।

ছোট্ট এই পড়ুয়াকে নিয়ে গর্বিত তার পরিবার।
ছোট্ট এই প্রকৃতির বাবা শান্তিপুরের গোবিন্দপুর পাঁচপোতা এলাকার বাসিন্দা ডাঃ কৃষ্ণপদ বৈরাগী। হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে জলপাইগুড়িতে থাকেন তিনি। মা ডাঃ স্বপ্না সরকার পূর্ব বর্ধমানে স্কুল হেলথ মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। মেয়ের আশ্চর্য প্রতিভার কথা তাঁরা জানতে পারেন যখন বছর দুয়েক আগে প্রকৃতিকে নিয়ে চেন্নাইয়ে গিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তামিলনাডু সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টারে ঘুরতে গিয়ে সেখানে প্রদর্শিত বিভিন্ন দেশের টাইম জোনের নীচে আঁকা জাতীয় পতাকাগুলো দেখে বেশ কিছু ভুল ধরে ফেলে ওই খুদে পড়ুয়া। প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা দেখে কার্যত অবাক বনে গিয়েছিলেন সায়েন্স সেন্টারের কর্মকর্তারা। সেখান থেকে প্রকৃতিকে তার আশ্চর্য প্রতিভার জন্য পুরস্কৃত করা হয়।

প্রকৃতির বাবা-মায়ের কথায়, দু’ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা, ওয়ার্ল্ড ম্যাপের ওপর বিশেষ আগ্রহ জন্মায় ওর। আর এখন পৃথিবীর ১৯৫টি দেশের নাম জাতীয় পতাকা দেখেই অনর্গল বলে দিতে পারে সে। এর জন্য প্রকৃতির সময় লাগে মাত্র এক মিনিট।

চলতি মাসের শুরুতে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে নাম নথিভূক্ত করার জন্য যাবতীয় তথ্য ও প্রকৃতির ভিডিও রেকর্ড পাঠিয়েছিল পরিবার। দিন তিনেক আগেই মিলেছে স্বীকৃতি। ১ মিনিট ১ সেকেন্ড ১৭ মিলি সেকেন্ডে বিশ্বের দ্রুততম খুদে পড়ুয়া হিসেবে পৃথিবীর প্রতিটি দেশের নাম মুখস্থ বলার রেকর্ড গড়েছে সে। সংস্থার পক্ষ থেকে প্রকৃতির জন্য পাঠানো হয়েছে একটি সুদৃশ্য মেডেল। এছাড়াও শংসাপত্র, পেন সহ একাধিক উপহার পেয়েছে খুদে পড়ুয়া। প্রকৃতির বাবা কৃষ্ণপদবাবু বলেন, আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই ভীষণ ব্যস্ত থাকি। মেয়ের মনে রাখতে পারার আশ্চর্য ক্ষমতা প্রথমে আমাদেরও অবাক করেছিল। এরপর পড়াশোনার পাশাপাশি ওর আগ্রহের প্রতিও বাড়তি গুরুত্ব দিই আমরা। প্রকৃতির মা স্বপ্নদেবী চান, গিনেস এর মতো জায়গায় স্থান পাক মেয়ের নাম। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে সেই প্রস্তুতিও শুরু করেছেন তিনি। সমস্ত দেশের জাতীয় পতাকা ছাড়াও ইতিমধ্যেই অন্তত সাতটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত আয়ত্ত্ব করে ফেলেছে সাত বছরের এই শিশু।

রবিবার সকালে বাড়িতে বসে চলছিল তারই প্র্যাক্টিস। লাজুক স্বভাবের প্রকৃতি বলে, পৃথিবীতে আরও অনেক ছোট ছোট আইল্যান্ড রয়েছে, যেগুলির নিজস্ব জাতীয় পতাকা আছে। এসব জানতে তার খুব ভালো লাগে।

Leave a Reply