মলয় দে নদীয়া :-নদীয়ার শান্তিপুরের ইতিহাস, শান্তিপুরের সংস্কৃতি, শান্তিপুরে ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে রয়েছে সুরধ্বনী নদী । সুরধ্বনী নদীর সাথে জড়িয়ে রয়েছেন শান্তিপুরনাথ- বৈষ্ণবকূলচূড়ামনি শ্রীশ্রীঅদ্বৈতাচার্য এবং স্বয়ং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। তাঁদের স্মৃতিবিজরিত নদী অনেকদিন আগেই অভিমান করে চলে গেছে । রেখে গেছে নদী খাত ।সেই খাত বেয়ে আজও বন্যার সময় বাগআঁচড়া, গয়েশপুর, শান্তিপুর শহরের ২নং ওয়ার্ড সহ বিস্তীর্ন অঞ্চল বন্যার কবল থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পায় । বর্ষার জল সহায়তা করে এলাকার কৃষি কাজে।
ওই এলাকার এক ব্যবসায়ী মানিক দেবনাথ তার নিজের স্বার্থে শান্তিপুর বাবলা বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় সুরধ্বনি ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । বিষয়টি রানাঘাটের এসডিও, শান্তিপুরের বিডিও, শান্তিপুরের ওসি, বিধায়ক, পৌরপতি সহ প্রশাসনিক ব্যক্তিদের জানানো হয়েছে ইতিমধ্যেই।
২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদেরও অভিযোগ ঐ নদী ভরাট হয়ে গেলে তাদের বাড়িগুলিও ভেসে যাবে। তাই তারাও নদী ভরাটের বিরুদ্ধে । এ বিষয়ে প্রায় ১৫০ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন পত্র বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী এবং পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত সরকার ঘোষের কাছে জমা করেন দু নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুষ্পা দেবনাথ।
তিনি বলেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিদের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে পরিবেশ রক্ষা করতে বলেছেন, এক্ষেত্রে এই ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থের জন্য পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বহু মানুষ, বর্ষার সময় প্রতিবার ঘরছাড়া হতে হয় অনেককেই।
বাবলা অঞ্চলের প্রধান উন্নতি সর্দার জানান, তারাও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি করবেন। শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ বলেন, নদীর একপাশ পৌরসভা অন্ন পাশ পঞ্চায়েত। তবুও নদী ভরাট কখনোই বরদাস্ত করা যাবে না।
বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, বিষয়টি ইতিমধ্যেই সেচ দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছি।
পরিবেশ কর্মীরাও ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সম্ভব হয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মানিক দেবনাথ এর কাছে, বিষয় টি প্রসঙ্গে জানতে গেলে, সাংবাদিকদের নানা ধরনের ভীতি প্রদর্শন করা হয়। ভিডিও বক্তব্য দিতে অস্বীকার করে বলেন, এখানে কোনদিনই নদী ছিল না।
নাট্যকার, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, পরিবেশ কর্মী ,বিজ্ঞান কর্মী সচেতন নগরীকে একটি বড় অংশ তার ঔদ্ধত্য দেখে স্তম্ভিত। সমস্ত জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে কিভাবে নদী ভরাট করার সাহস পায় সেই প্রশ্নই সকলের মনে। তবে তারা নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত সমগ্র নদীর পুনরুদ্ধার দাবি করেছেন।আজ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেচ দপ্তর এর আধিকারিক ঘুরে দেখেন ওই স্থানে গিয়ে। তারা বলেন রিপোর্ট জমা দিয়ে দেওয়া হবে এক সপ্তাহের মধ্যে, বি এল আর ও র দপ্তরের একটি রিপোর্ট বিশেষ প্রয়োজন। তা হাতে পেলেই নিশ্চিত করা যাবে।