মলয় দে নদীয়া:- বিয়ের মরশুম চলছে, ফলে অজস্র পাত্র-পাত্রীর বিবাহ হচ্ছে । তার জন্য আমাদের মতো সাংবাদিকদের ক্যামেরা নিয়ে দৌড়ানোর প্রয়োজন নেই। বাজারে অনেক স্টুডিও আছে ভাড়া করে প্রচুর ছবি তোলা যায় কিন্তু বিয়ে যদি অন্য রকম হয় তাহলে তো সাংবাদিকদের ক্যামেরা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে
নদীয়া জেলার শান্তিপুরের বাসিন্দা মিঠু প্রামানিক এবং সোমা প্রামানিকের একমাত্র কন্যা ইমন প্রামানিকের সাথে হাওড়া জেলার শিবপুরের ব্যেতাই তলার বাসিন্দা অমল বিশ্বাস এবং মিতালী বিশ্বাসের একমাত্র পুত্র অর্কিড বিশ্বাসের বিবাহ ঠিক হয় ১৩ই ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ ৷ ইমন প্রামানিকের সোমা প্রামনিক একজন লেখিকা ৷ ফলে তিনি সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন ৷ সমাজের নানান ঘটনা তার কলমে উঠে আসে ৷ পৌঁছায় পাঠকের কাছে ৷ সোমাদেবীর মাও সমাজ সচেতন মানুষ ৷ বিবাহ অনুষ্ঠানে তিনি “কন্যাদান” বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারতেন না ৷ তার মত ছিলো কন্যা কোন দানের বস্তু নয় ৷ রক্ত-মাংস, মজ্জায় গঠিত একটি মানুষ ৷ বাজারের আলু-পটল নয় ৷ তাই তাকে দান করার প্রশ্নই আসেনা ৷ সোমাদেবীও তার মায়ের ভাবনা চিন্তাকে মনে-প্রানে সমর্থন করেন ৷ তাই নিজের মেয়ের বিবাহ অনুষ্ঠানে “কন্যাদান” বন্ধ রেখে রক্তদানের ব্যবস্থা করেছেন ৷ একই সঙ্গে বন্ধ রেখেছেন “কনকাঞ্জলী” প্রথা ৷ সোমাদেবী জানান যে, কোন মানুষকে কি এভাবে কারো কাছে দান করা যায় ? যায় না ৷ একই ভাবে বাবা-মায়ের কাছে সন্তানের কোন ঋনই নেই ৷ ফলে বাবা মায়ের ঋন শোধ করার কোন প্রয়োজনই নেই ৷ তাই বিবাহ অনূষ্ঠানে সাবেকি ভাবনা “কন্যাদান” এবং “কনকাঞ্জলী” প্রথা তারা বন্ধ রেখে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন ৷
১৩ই ডিসেম্বর এমনই এক অভানব রক্তদান শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শান্তিপুর শান্তিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক লাল্টু ঘোষ ৷ এ ধরনের অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন লাল্টুবাবু ৷ যার বিবাহ অনুষ্ঠানে এমন অভিনব আয়োজন সেই ইমন প্রামানিক জানন এ ধরনের ভাবনাটা আমার মধ্যে ছিলো ৷ মা বাবা এবং পরিবারের জন্য সফল হলো ৷ “কন্যাদান” প্রথাটি আস্তে আস্তে উঠে যাক ৷ সমাজে এই ভাবনাটা ছড়িয়ে পড়ুক এটাই চাই ।