দেবু সিংহ ,মালদা : অল ইন্ডিয়া মেডিকেল প্রবেশিকা নিট পরীক্ষায় ৭২০র মধ্যে ৫৮৫ নম্বর পেয়ে নজির গড়লেন মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাড়িয়াল গ্রামের এক গৃহশিক্ষকের ছেলে তুলকালাম।গোটা ভারতের মধ্যে প্রায় ১৭ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭৬০৭ র্যাঙ্ক দখল করায় পরিবারের পাশাপাশি অভূতপূর্ব ফলাফলে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
মালদা আল-আমিন মিশনের উচ্চ মাধ্যমিকের অন্যতম সেরা ছাত্র তুলকালাম-এর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত আল-আমিন মিশন কর্তৃপক্ষ।
তুলকালাম ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের সেবা করতে চায়। তাই সে ২০১৯ সালে ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সিং নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেলেও গরিব মানুষের সেবা করবে বলে দু’বছর কঠোর পরিশ্রম করে এই সাফল্য অর্জন করেছে সে।
তুলকালাম ২০১৬ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার তুলসীহাটা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক ও ২০১৮ সালে মালদা মহেশমাটি ডি.এন. সাহা বিদ্যাভবন থেকে ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও মালদা আল-আমিন মিশন একাডেমীতে পড়াশোনা করতো।
বাবা আবুল কালাম একজন গৃহশিক্ষক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গৃহশিক্ষকতা করেন। মা সাইনুর বিবি একজন গৃহবধূ। পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন জোগানোর জন্য
অন্যের জমিতে গিয়ে ধান কাটে। বাস্তুভিটা ছাড়া জমি বলতে তাদের কিছুই নেই।তারা ৩ ভাই। তুলকালাম বড় ছেলে। একটিমাত্র ভাঙাচোরা কাঁচা ঘরেই বাবা-মা ও তিন ভাই সহ মোট পাঁচজনের বসবাস। টালির ছাউনি ঘরের ফাঁকফোকর দিয়ে আলো-বাতাস প্রবেশ করে ঘরের মধ্যে। জরাজীর্ণ দেওয়াল গুলিতে ফুটে উঠেছে দারিদ্র্যতার ছাপ। বাবার গৃহশিক্ষকতা করে যা সামান্য আয় হয় তা দিয়ে চলে তিন ছেলের পড়াশোনার খরচ ও সংসার। ছেলে ডাক্তার হয় গরিবের সেবা করবে এই আশায় বুক বেঁধে আছে তার পরিবার। কিন্তু পরিবারে আর্থিক অভাব প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবে কি?
সংবাদমাধ্যমের কাছে পরিবারের দুঃখের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন বাবা আবুল কালাম।
যদিও মালদা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান তুলকালাম ও তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।